কক্সবাজারের চকরিয়ায় গরু চুরির অভিযোগে মা-মেয়েকে রশিতে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় ছবি ও ভিডিও দেখে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চকরিয়া থানার পুলিশ রোববার (২৩ আগস্ট) রাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নজরুল ইসলাম সাইফ, জসিম উদ্দিন ও মো. নাছির। নজরুল গরু চুরি সংক্রান্ত মামলার বাদী মাহবুবুল হকের ছেলে আর জসিম ও নাছির এই দুইজন ওই মামলার সাক্ষী ছিলেন।
এদিকে সোমবার বিকেলে ৫৪ ধারায় তাদেরকে আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মা, ছেলে ও দুই মেয়েসহ ৫ জনকে রশিতে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় কয়েকটি ভিডিও ও ছবি পুলিশ সংগ্রহ করেছে। এসব ভিডিও ও ছবি দেখে কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে নজরুল, জসিম ও নাছিরকে হারবাং ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা গতকাল রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত ৩ জনকে সোমবার বিকেলে ৫৪ ধারায় আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছে। এছাড়াও গ্রেপ্তার ৩ জন গরু চুরির অভিযোগে মা, ছেলে ও দুই মেয়েসহ ৫ জনকে রশিতে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা জড়িত রয়েছে বলেও আদালতে উল্লেখ করা হয়।
ওসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “মা-মেয়েদের জামিন হয়েছে এবং তাদের পক্ষের আইনজীবী মোবাইলে থানায় যোগাযোগও করেছে। তারাও থানায় একটি মামলা দায়ের করবে বলেও আইনজীবী নিশ্চিত করেছেন।”
এদিকে শুক্রবার (২১ আগস্ট) চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ডবলতলী গ্রামে গরু চুরির অভিযোগে মা, ছেলে, দুই মেয়েসহ ৫ জনকে রশিতে বেঁধে নির্যাতন করেন স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁদের কয়েকটি গ্রাম ঘুরিয়ে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
এরপর সেখান থেকে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। পরে ওই রাতেই গরু চুরির অভিযোগ এনে তিন নারীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় মামলা করেন মাহবুবুল হক নামের এক ব্যক্তি। পরের দিন শনিবার আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। সোমবার কক্সবাজারের চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাজিব কুমার দেব মা-মেয়েসহ তিন নারীকে জামিন দেন। বাকি দুজনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।
নারীদের রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও ও কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে সমালোচনা শুরু হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার কক্সবাজার জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।