ঢাকা: রাজধানীর পল্লবী থানা হেফাজতে জনি নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পুলিশের তিন কর্মকর্তাসহ পাঁচ আসামির মামলায় রায় হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর।
রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সোমবার (২৪ আগস্ট) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ রায়ের এই দিন ধার্য করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- পল্লবী থানার তৎকালীন উপ পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) রাশেদুল, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু এবং পুলিশের সোর্স সুমন ও রাশেদ। আসামিদের মধ্যে এসআই জাহিদ ও সুমন কারাগারে থাকলেও বাকিরা জামিনে রয়েছেন।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরক্তি পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এ তথ্য জানিয়েছেন। আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলার আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন। এরপর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে মাঝ পথে যুক্তিতর্ক বন্ধ হয়ে যায়। চলতি মাসে নিয়মিত আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে সোমবার এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১১ নম্বর সেক্টরে স্থানীয় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশের সোর্স সুমন মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় জনি ও তার ভাই সুমনকে সেখান থেকে চলে যেতে বললে সে পুলিশকে ফোন দেয়। পুলিশ এসে জনিকে আটক করে। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশকে ধাওয়া দিলে তারা গুলি ছোড়ে।
আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের একপর্যায়ে জনির অবস্থার অবনতি হয়। এ সময় তাকে প্রথমে ন্যাশনাল হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক জনিকে মৃত ঘোষণা করেন।
জনির মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হোসেন তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওসি জিয়াউর রহমানসহ পাঁচ জনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে প্রতিবেদনে নতুনভাবে অভিযুক্ত করা হয়।
২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। অভিযোগ গঠনের পর প্রায় সাড়ে চার বছরে এ মামলার বিচারকাজ শেষ হলো।