ঢাকা: যৌতুক ও নির্যাতনের মামলায় বেসরকারি সংস্থা আশা, ঢাকার নবাবপুর উপজেলার গালিমপুর ব্রাঞ্চের ব্যবস্থাপক শাহজাহান কবিরকে (৩৮) কারাগারে পাঠনো হয়েছে। ওই ব্যক্তির স্ত্রী, কেরানীগঞ্জের এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার করা মামলায় পরোয়ানার ভিত্তিতে গত ১৯ আগস্ট তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর ঢাকার তৃতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারেই আছেন।
সোমবার (২৪ আগস্ট) বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান মামলার বাদী ও ওই স্কুল শিক্ষকা। তিনি বলেন, সরকারি চাকরি করার পরও আমি স্বমীর নির্যাতন থেকে রেহাই পাইনি। আমাকে রেখে আরেকটি বিয়ে করেছে বলে জানতে পেরেছি। আমি তার কঠোর শাস্তি দাবি করছি।
ওই নারী জানান, ২০০৬ সালের ৬ ডিসেম্বর ৯৯ হাজার নয়শ টাকা দেনমোহরে কেরানীগঞ্জের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই স্কুল শিক্ষিকাকে বিয়ে করেন শাহজাহান কবির। বিয়ের ক্ষেত্রে তিনি প্রতারণার আশ্রয় নেন। এর আগেও যে তিনি বিয়ে করেন ও তার এক সন্তান আছে তা গোপন করেন।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি তার স্বামী দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর তিনি ওই টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মারধর ও নির্যাতন করেন।
গত ১৭ নভেম্বর তাকে বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান শাহজাহান কবির। এরপর ওই স্কুল শিক্ষিকা চলতি বছর ৯ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ) ধারায় নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়।
সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ মার্চ আদালত আসামি শাহজাহান কবিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরোয়ানা মূলে গত ১৯ আগস্ট তাকে নবাবগঞ্জের অফিসে দায়িত্বপালনকালে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কারাগারে থাকায় অভিযুক্তের নিজের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শাখা ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে আশার ঢাকা জেলার প্রধান গোলাম হায়দার চৌধুরী বলেন, শাহজাহান কবির গ্রেফতার হওয়ার পরই তাকে বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এখন তিনি জামিনে মুক্তি পেলে তাকে অভিযোগের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবো। এছাড়া বিষয়টি যেহেতু আদালতে গড়িয়েছে তাই আদালতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন কিনা সে বিষয়টিও লক্ষ্য রাখবো। সার্বিক বিবেচনায় দোষী হলে আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবো।