ফরিদপুর: সিআইডি’র দায়ের করা দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় এবার গ্রেফতার হলেন ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহামুদ শামীম।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) রাতে ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি পুলিশের একটি দল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান।
গত ২৬ জুন শহর আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলকে প্রধান আসামি করে অবৈধ উপায়ে দুই হাজার কোটি টাকা আয় ও পাচারের অভিযোগে ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের করে সিআইডি। সেই মামলায় আদালতের মাধ্যমে সিআইডি রুবেল ও বরকতকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে এর সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম প্রকাশ করে রুবেল ও বরকত।
পুলিশ জানায়, রুবেল-বরকতের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহামুদ শামীমকে গ্রেফতার করা হলো। এর আগে এ মামলায় আরো গ্রেফতার হয়েছেন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী ও জেলা শ্রমিক লীগের অর্থ সম্পাদক বেল্লাল হোসেন।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় শামীমের নাম আসায় তাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ফরিদপুরে চাঁদাবাজি ও হামলার মামলা রয়েছে। সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ফরিদপুরে নিয়ে আসা হবে।
গত ১৬ জুন রাতে শহরের মোল্লাবাড়ী সড়কে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে সুবল চন্দ্র সাহা গত ১৮ জুন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ৭ জুলাই পুলিশের বিশেষ অভিযানে সুবল সাহার বাড়িতে হামলার মামলায় গ্রেফতার হন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সেই সময়ের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত তার ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ আরও সাতজন। এর পরে ঢাকার সিআইডি পুলিশ বরকত ও রুবেলের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তদন্তে নামে। তদন্তে প্রাথমিকভাবে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ঢাকার কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেসটিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।
এ ঘটনার পর বরকতকে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রুবেলকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগ নেতা সুবল সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনার পর ফরিদপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার, জেলা শ্রমিক লীগের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান ও ছাত্রলীগ সভাপতি নিশান মাহামুদ শামীম।