মেজর (অবঃ) সিনহা রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যাকালে মেরিন ড্রাইভের শামলাপুরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) চেকপোস্টে দায়িত্বপালন করা এপিবিএনের তিন সদস্যকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মেলার পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ। এ তিনজন গ্রেফতার হলে সিনহা হত্যার ঘটনায় গ্রেফতারের সংখ্যা ১৩ জনে এসে দাঁড়াবে।
মঙ্গলবার গ্রেফতারের প্রক্রিয়ায় থাকা তিনজন হলেন, এপিবিএনের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাহজাহান, কনস্টেবল রাজীব ও আব্দুল্লাহ। এদের সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনেছিল তদন্তকারি সংস্থা র্যাব। ঘটনার দিন এই তিনজনই এপিবিএনের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করেছেন।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ঘটনার সময় চেকপোস্টে দায়িত্বপালন করা এপিবিএন এর তিন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে হত্যাকাণ্ডে তারা সম্পৃক্ত। সব পর্যালোচনা করে তাদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে। এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।
এর আগে এ হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা ১০ জন হলেন, সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সিনহা হত্যা মামলায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়ার নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দীন ও মোহাম্মদ আইয়াছ।
গত ৩ জুলাই শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও তাসকিনকে নিয়ে সিনহা কক্সবাজার যান ভ্রমণবিষয়ক ভিডিওচিত্র ধারণ করতে। গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিষবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত।
৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়। একটি মামলায় হয় টেকনাফ থানায়। এই মামলায় সরকারি কাজে বাধা ও গুলিতে নিহত হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। সেই মামলার আসামি করা হয় সিফাতকে। দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় আসামি করা হয় শিপ্রা দেবনাথকে।
৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন বাদী হয়ে একই আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।