এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর আসামি নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা ও শাজাহান তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) গুলশান শাখায় দুটি চলতি হিসাব খোলেন। পরদিন পৃথক দুটি হিসাবের বিপরীতে ২ কোটি টাকা করে মোট ৪ কোটি টাকা ঋণের আবেদন করা হয়। ঋণের আবেদনপত্রে ঠিকানা হিসেবে উত্তরার একটি বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করা হয়। যে বাড়ির মালিক সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

মামলার বাদি দুদক কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেন  আদালতকে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংকের কর্মকর্তা মামলার আসামি জিয়া উদ্দিন আহমেদ, সফিউদ্দিন আসকারী ও লুৎফুল হক ঋণ আবেদন যাচাই-বাছাই না করে এই ব্যাংক এবং ব্যাংকের কোন নীতিমালা না মেনেই ঋণ প্রস্তাব প্রস্তুত করেন। তাতে নিজেরা স্বাক্ষর করেন।

আসামি জিয়াউদ্দিন আহমেদ ঋণ প্রস্তাবটি হাতে হাতে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে যান। ফারমার্স ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় কোন যাচাই-বাছাই না করে ওই ঋণ প্রস্তাব দুটি অনুমোদনের জন্য নোট আকারে উপস্থাপন করেন।

ব্যাংকটির ক্রেডিট শাখার গাজী সালাউদ্দিনের কাছে নিয়ে যান। তিনিও কোন প্রকার যাচাই-বাছাই না করে ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শামীমের কাছে নথিটি নিয়ে যান। ব্যাংকের ঋণ পলিসি নীতি অনুযায়ী এই ধরনের ঋণ অনুমোদনের ক্ষমতা ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের না থাকা সত্ত্বেও অবৈধ প্রক্রিয়ায় তিনি ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করেন।

পরদিন ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর আসামি শাহজাহান ও নিরঞ্জন সাহার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুমোদিত ঋণের টাকা সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নামে পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়। ওই বছরের ৯ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্টের সোনালী ব্যাংক শাখায় সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ব্যাংক হিসাবে চার কোটি টাকা জমা হয়।

দুদক কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেন আদালতকে আরও বলেন, সুপ্রিমকোর্টের সোনালী ব্যাংক শাখায় টাকা জমা হওয়ার পর সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বিভিন্ন সময়ে টাকা তুলে তা হস্তান্তর স্থানান্তর করেন। এর মধ্যে ওই বছরের ২৮ নভেম্বর দুটি চেকের মাধ্যমে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার আপন ভাইয়ের শাহ্জালাল ব্যাংকের উত্তরা শাখার হিসাবে এক কোটি ৪৯ লাখ টাকা ও ৭৪ লাখ টাকা স্থানান্তর করেন। ওই টাকা ও পরে স্থানান্তর রূপান্তর করা হয়।

মামলার আসামি রনজিত চন্দ্র সাহা এই ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের সময়ে নিজে ব্যাংকে উপস্থিত থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নাম উল্লেখ করে ভুয়া ঋণ অনুমোদনের ব্যবস্থা করেন। ঋণ আবেদনকারী নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা আসামি রনজিত চন্দ্র সাহার ভাইপো।

অপর ঋণ আবেদনকারী শাহজাহান রনজিত চন্দ্র সাহার বাল্যবন্ধু। আসামি শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা দুজনই গরীব ও দুস্থ তারা ব্যবসায়ী নন।

মামলার বাদি দুদক কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেনের জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন