আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী আব্দুল জব্বারের মৃত্যু

আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী আব্দুল জব্বারের মৃত্যু

যুদ্ধাপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ফেরারি আসামি আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার  (৮৮)  মারা গেছেন।  মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) সকালে তিনি আমেরিকার ফ্লোরিডায় তার মেয়ের বাসায়  আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় মারা যান।

 

পারিবারিক সূত্র তার মৃত্যুর বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যানসার আক্রান্ত অবস্থায় আমেরিকায় তার বড় মেয়ের বাসায় আত্মগোপনে থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার বাড়ি মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের খেতাচিড়া গ্রামে।

ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বার অভিযুক্ত হন হত্যা-গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্মান্তরিতকরণ এবং বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের ৫টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন’১৯৭৩ এর ৩(২)/এ, ৩(২)/সি, ৩(২)/ডি, ৩(২)/জি ও ৩(২)/এইচ এবং ২০(২) ধারা অনুসারে গঠন করা এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ৩৬ জনকে হত্যা-গণহত্যা, ১৫ জনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও গুরুতর জখম, ২শ’ জনকে ধর্মান্তরিতকরণ এবং লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে ৫শ’ ৮৭টি বাড়ি-ঘর ধ্বংস করার অভিযোগ।

এসব অভিযোগের মধ্যে সবগুলো অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে।

রায়ে ১ নম্বর (দুই মুক্তিযোদ্ধা হত্যা ও ১৬০টি বাড়িতে লুটপাট-অগ্নিসংযোগ), ২ নম্বর (শারদা কান্ত পাইককে হত্যা ও ৩৬০টি বাড়িতে লুটপাট-অগ্নিসংযোগ), ৩ নম্বর (১২ জনকে গণহত্যা ও ৬০টি বাড়িতে লুটপাট-অগ্নিসংযোগ)  এবং ৫ নম্বর (২২ জনকে গণহত্যা ও ১৫ জনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, গুরুতর জখম)  অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ পেয়েছেন আজহার। এছাড়া ৪ নম্বর অভিযোগে ২০০ জনকে ধর্মান্তরিতকরণের দায়ে আরও ২০ বছরের কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে তাকে।

১৯৭১ সালের আগের মুসলিম লীগের নেতা আব্দুল জব্বার ১৯৫৬ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। স্থানীয় মুসলিম লীগ নেতা শ্বশুরের হাত ধরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তৎপরতায় জড়ান জব্বার। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার নেতৃত্বে মঠবাড়িয়া থানায় রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। জব্বার ছিলেন থানা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান। আত্মীয় ইস্কান্দার মৃধাকে তিনি রাজাকার কমান্ডার করেন।

জব্বারের নেতৃত্বে ও তার উপস্থিতিতে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার ফুলঝুড়ি, নলী ও আঙ্গুলকাটা গ্রামে মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হয় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

১৯৮৮ ও ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বার।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন