করোনায় ১৮ মার্চ হতে বন্ধ হওয়া পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাস পর সোমবার (১৭ আগস্ট) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিধি মানা সাপেক্ষে সীমিত আকারে সৈকত তীরের হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে এটি পরীক্ষামূলক বলে উল্লেখ করেছেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। জেলা প্রশাসক বলেন, জেলার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে বিভিন্নভাবে প্রায় কয়েক লাখ মানুষের জীবিকা জড়িত। তাদের কথা চিন্তা করে সীমিত আকারে পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে স্বাস্থবিধি কঠোরভাবে মেনে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটন শিল্প খুলতে হবে। মেনে চলতে হবে, এ বিষয়ে প্রণীত কর্মপন্থার সকল নিয়মাবলি। এ বিষয়ে স্টেক হোল্ডারসহ কক্সবাজারে পর্যটনশিল্পের সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিসি বলেন, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে এবং আগত পর্যটকদের যে কোনো অবস্থাতেই স্বাস্থ্য বিধি মানাতে বাধ্য করতে হবে। তারপরও কেউ স্বাস্থ্য বিধি লঙ্ঘন করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এজন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সার্বক্ষনিক তদারকি থাকবে। গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির জুম কনফারেন্স সভায় শুধুমাত্র কক্সবাজার পৌর এলাকার পর্যটন শিল্প সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান সমুহ খোলার অনুমতি দিতে সিদ্ধান্ত হয়। এরই আলোকে সোমবার ১৭ আগস্ট থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে আবারও পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পথচলা শুরু হচ্ছে। সেই জুম কনফারেন্সে কক্সবাজারে কোভিড-১৯ এর সার্বিক সমন্বয়কারি স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব-উপসচিব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার, সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. অনুপম বড়ুয়া, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের প্রতিনিধিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।এদিকে, দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস পর সীমিত আকারে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সৈকত তীরের হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্টুরেন্ট, ক্ষুদে, ভাসমান ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে প্রস্তুতির ধুম পড়েছে। ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। স্বাস্থ্য বিধির আলোকে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। ফিরে আসছে, কক্সবাজারের কোলাহলময় পর্যটন শিল্পের আসল রূপ। সিনহা হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা কক্সবাজার এসে বিভিন্ন হোটেলে ওঠায় তাদের দেখা-দেখি গত দুয়েকদিন আগে থেকে কক্সবাজার আসা শুরু করেছে অনেক পর্যটক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে প্রতি মাসে লোকসানটা কোনো মতে কাটিয়ে উঠতে পারবে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।পুুরো পর্যটন শিল্প কখন খুলে দেওয়া হবে এমন প্রশ্নে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বলেন, কক্সবাজার পৌর এলাকার পর্যটন শিল্প সীমিত আকারে খোলা থাকাবস্থায় কোভিড-১৯ এর সংক্রামণের মাত্রা ও গতি প্রকৃতি পর্যবেক্ষন করে পর্যটন শিল্পের উম্মুক্ত এলাকা আরও সম্প্রসারিত করা বা সংকুচিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পর্যটন স্পট খুলে দেওয়ার খবরে কক্সবাজার জেলা টুরিস্ট পুলিশও পর্যটক এবং পর্যটন শিল্পের সার্বিক নিরাপত্তায় বেশ প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান।