ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নাগরিক হয়রানির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এজন্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব । তিনি অভিযোগ করেন, মামলার ভয়ে আজ জাতির কণ্ঠ রুদ্ধ। বিবেকের স্বাধীনতা শৃঙ্খলিত, যা সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল।আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব অভিযোগ করেন।বিএনপির মহাসচিব বলেন, ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর তথ্যমতে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে এই আইনে ১৫৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানি করা হয়েছে। আর্টিকেল ১৯–এর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে ৬৩টি। ২০১৮ সালে ডিজিটাল আইনে ও আইসিটি অ্যাক্ট মিলে মামলা হয়েছে ৭১টি। অন্যদিকে, ২০২০ সালের ২২ জুন পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে ১০৮টি। এসব মামলায় আসামি ২০৪ জন। তাঁদের মধ্যে সাংবাদিক ৪৪ জন। অন্যান্য পেশায় কর্মরত ও সাধারণ মানুষ ১৬০ জন।মির্জা ফখরুল বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাগুলোর মূল অভিযোগ হলো ব্যক্তির মানহানি, আক্রমণাত্মক মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শন কিংবা রাষ্ট্রের তথ্য–উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ করা, ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন, এই সরকারের মন্ত্রী–এমপিরা প্রতিনিয়ত কীভাবে বিরোধীদলীয় কিংবা ভিন্নমতাবলম্বীদের সম্মানহানি করছে। কীভাবে আক্রমণাত্মকভাবে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করছে। কীভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।’বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের সুনাম আজ বিশ্বদরবারে দুর্নীতির সূচকের তলানিতে। এ সরকারের নেতা–কর্মীদের করোনা সার্টিফিকেট বিক্রির কারণে ইতালিতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কোনো ব্যক্তিকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। নিউইয়র্ক টাইমসে নেতিবাচক প্রবন্ধ হয় বাংলাদেশকে নিয়ে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের শীর্ষ দেশগুলোয় বাংলাদেশ উঠে আসে।মির্জা ফখরুল বলেন, গত ছয় মাসে ১২ জন সাংবাদিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ইতিমধ্যেই সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের জন্য সাংবাদিকেরা স্বাধীনভাবে লিখতে পারছেন না।