ভার্চুয়াল নয়, এখন থেকে নিম্ন আদালতে বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী জনগণের শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার কাজ অনুষ্ঠিত হবে। করোনা ভাইরাসজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রায় পাঁচ মাস পর কাল বুধবার থেকে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত এবং ট্রাইব্যুনালসমূহে শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে এ বিচার কার্যক্রম শুরু হবে।
শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হলেও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এজলাস কক্ষ ও আদালত প্রাঙ্গণে যথাযথভাবে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে বিচারক ও আইনজীবীবৃন্দকে ক্ষেত্রমত সাদা শার্ট বা সাদা শাড়ি/সালোয়ার কামিজ ও সাদা নেক ব্যান্ড/কালো টাই পরিধান করতে বলা হয়েছে।
এদিকে নিম্ন আদালতে বিচার কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হলেও কবে থেকে সুপ্রিম কোর্টে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার কাজ শুরু হবে সেই বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বৃহস্পতিবার ফুল কোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিকাল ৩ টায় অনুষ্ঠিত এই ফুল কোর্ট সভায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা অংশ নেবেন। সভার প্রথম এজেন্ডা হিসেবে উচ্চ আদালত খুলে দেওয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অনুরোধের বিষয়টি রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় এজেন্ডা হিসেবে রয়েছে চলতি বছরের সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক অবকাশকালীন ছুটি কমানো বা বাতিল করার বিষয়টি। সভায় বিচারপতিরা সুপ্রিম কোর্ট খুলে দেওয়া ও ছুটি হ্রাস করার বিষয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিবেন। ওই মতামতের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে
প্রসঙ্গত, এর আগে অনুষ্ঠিত ফুল কোর্ট সভায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা একমত পোষণ না করায় কোর্ট খুলে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি প্রধান বিচারপতিরা সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এরপরই কোর্ট খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে দ্বিতীয়বার প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
এজলাস কক্ষ ও আদালত প্রাঙ্গণে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ:
এজলাস কক্ষ ও আদালত প্রাঙ্গণে আবশ্যিকভাবে সার্বক্ষণিকভাবে মুখাবরণ এবং হাতমোজা পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে। প্রত্যেকের শরীরে তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে। মামলার শুনানি এমনভাবে রাখতে হবে যাতে এজলাস কক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ জনসমাগম না ঘটে। আদালতে প্রবেশের সময় কারো শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রী বা তার চেয়ে বেশি বা কোভিড-১৯ এর লক্ষণসমূহ থাকলে অবশ্যই তাকে আদালত ভবনে প্রবেশ করতে না দিতে বলা হয়েছে। এজলাস কক্ষে প্রবেশের সময় আদালতের কর্মচারী দ্বারা প্রত্যেক ব্যক্তির শারীরিক তাপমাত্রা থার্মাল স্ক্যানার দ্বারা পরীক্ষা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পর বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী জনগণকে সুরক্ষা দিতে চালু করা হয় ভার্চুয়াল বিচার ব্যবস্থা। পরে সশরীরে আসামিদের আত্মসমর্পণ করে আদালতে জামিন চাওয়ার বিষয়টি চালু করা হয়। করোনার কারণে দীর্ঘ চার মাস বন্ধ ছিলো এই ব্যবস্থা।