রাণীনগরে আবু বক্কর নামে দিনমজুর লম্পটের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়া এবং পরিবারকে জানিয়ে দেয়ায় স্কুলছাত্রীর বাড়িতে দফায় দফায় হামলা চালিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার রাতে উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাহাদুরপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত-আহাদ আলির ছেলে আবু বক্কর দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশি হাতেম আলির স্কুল পড়ুয়া মেয়ে সায়েম উদ্দিন মেমেরিয়াল একাডেমির নবম শ্রেণির ছাত্রী ফাইমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এনিয়ে এক বছর আগে পারিবারিক ভাবে বৈঠকের মাধ্যমে তাকে নিষেধ করা হয়। তারপরেও কোন ভাবেই ফাইমার পিছু ছাড়েনি আবু বক্কর।
গত রবিবার সন্ধ্যায় আবারও ফাইমাকে কু-প্রস্তাব দিলে সে তার পরিবারকে জানিয়ে দেয়। এসময় ফাইমার পরিবার প্রতিবাদ করলে আবু বক্কর পাশের গ্রাম থেকে ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনী নিয়ে এসে বাড়িতে দুই দফা হামলা চালায়। হামলায় নিহতের মামা আব্দুল মজিদসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের নিয়ে চিকিৎসার জন্য রাণীনগর হাসপাতালে গেলে তৃতীয় বারের মত আবারও হামলা চালায়।
নিহতের মামী ছালমা জানান, তৃতীয় দফায় বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ না থাকার সুযোগে আবু বক্কর ও তার ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনীর সদস্যরা ফাইমাকে মারপিট করে। পরে দঁড়িতে ঝুলিয়ে রেখে যায়। ফাইমাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রাণীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ বাহাদুরপুর গ্রামের শহিদুলের ছেলে সম্রাট (২০), একই গ্রামের গফুরের ছেলে মোসাদ্দেক (৩০) ও পাশের সদর উপজেলার চন্ডিপুরগ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে ইমনকে (২০) গ্রেফতার করে সোমবার বিকেলে আদালতে সোর্পদ করা করেছে। প্রধান আসামী আবু বক্কর পলাতক রয়েছে।
রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহুরুল হক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন এবং সদর হাসপাতাল থেকেই লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে ৩জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। প্রধান আসামি আবু বক্কর পলাতক থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত তাকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।