রাজধানীসহ সারা দেশে আজ ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হচ্ছে। করোনার এই সময়ে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মুসলিম সম্প্রদায় ঈদ উদ্যাপন করছে।
করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আজ শনিবার দেশের মসজিদে মসজিদে লাখো মুসল্লি ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা আগেই বলা হয়।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে আজ সকাল সাতটায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। মুসল্লিরা মুখে মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় করেছেন। মসজিদের ভেতর জায়গা না হওয়ায় অনেকে মসজিদের বাইরে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে সবাই কোলাকুলি করা থেকে বিরত ছিলেন।
মাস্ক ছাড়া বায়তুল মোকাররমে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় করার জন্য কিছুক্ষণ পরপর অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
ঈদের নামাজ শেষে করোনা মহামারি থেকে রক্ষা পেতে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া চাওয়া হয়। নামাজ আদায় শেষে মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুয়ায়ী পশু কোরবানি করছেন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য অনুরোধ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে গত ১৪ জুলাই ধর্ম মন্ত্রণালয় এক নির্দেশনা জারি করে। সেখানে বলা হয়, ‘চলতি বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামাত কাছের মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে নামাজ আদায় করার ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ, ঈদের নামাজ আদায়ের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের আগে জীবাণুনাশক রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, করোনার সংক্রমণ রোধে অজু করার স্থানে সাবান অথবা হ্যান্ডস্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদের প্রবেশপথে সাবান অথবা হ্যান্ডস্যানিটাইজার রাখতে হবে। যাঁরা মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসবেন, তাঁরা যেন বাসা থেকে অজু করে আসেন। অজু করার সময় ২০ সেকেন্ড সময় ধরে হাত ধুতে হবে। মসজিদে নামাজ আদায় করতে হলে অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে।
ঈদের নামাজ আদায় করার পর কোলাকুলি বা হাত মেলানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সবার সুবিধার্থে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশনা মেনে চলতে মুসল্লিদের অনুরোধ করা হয়েছে।
সর্বোপরি করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার জন্য মসজিদের খতিব ও ইমামদের অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।
প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইব্রাহিম (আ.) প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)–কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহপাকের অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকে। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান মুসল্লিদের জন্য আল্লাহ কোরবানি ওয়াজিব করে দিয়েছেন।