ঢাকা: লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় মানবপাচার চক্রের অন্যতম হোতা কামাল হোসেন ওরফে হাজি কামাল (৫৫) দুই মামলায় জামিন পাননি।
রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জমানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ তার আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ বলেন, গত ২৮ মে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী ২৬ বাংলাদেশি ও কিছু সুদানি মানবপাচারকারীদের হাতে হত্যার শিকার হন।
‘আসামি কামাল হোসেন প্রথমে খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়ার গোলারবাড়ী মসজিদ গলির দুলাল সাহেবের বাড়ির ৬ষ্ঠ তলায় ভাড়া থাকতেন। এখানে লোকজনকে জড়ো করতেন। তাদের ইন্ডিয়া হয়ে দুবাই, মিশর থেকে পরবর্তীপর্যায়ে লিবিয়ায় পাঠানো হতো। ’
তিনি বলেন, ইউরোপ-ইতালি পাঠানোর নাম করে তাদের আটকিয়ে নির্যাতন করা হতো। ভিডিওধারণ করে আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে আট-দশ লাখ টাকা আদায় করতো। সুদানি কয়েকজন এরকম অত্যাচারের শিকার হয়ে লিবিয়ার মাফিয়াচক্রের একজনকে হত্যা করেন। এরপর লিবিয়ার মাফিয়াচক্র এসে সুদানিসহ বাংলাদেশিদের হত্যা করে। পরে ঢাকায় মামলা হয়।
১ জুন ভোরে র্যাব-৩-এর একটি দল গুলশান থানাধীন শাহজাদপুরের বরইতলা বাজার খিলবাড়ীরটেক এলাকা থেকে হাজি কামালকে আটক করে।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্কারুজ্জামান তখন জানিয়েছিলেন, গ্রেফতারের সময় হাজি কামালের কাছে অবৈধ ৩১টি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে।
আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া জানান, ঢাকা ও হবিগঞ্জে করা দুই মামলায় আদালত তার জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন।
গত ২৮ মে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী ২৬ বাংলাদেশি মানবপাচারকারীদের হাতে নিহত হন। একই ঘটনায় আহত হন আরও ১১ বাংলাদেশি। ওই ঘটনা এরই মধ্যে দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-৩ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। তদন্তে উঠে আসে মানবপাচারকারী হাজি কামালের নাম। কামাল কুষ্টিয়া সদরের বাসিন্দা। লিবিয়া ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবৈধ প্রক্রিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।