ঢাকা: একক ব্যক্তির কোম্পানি প্রতিষ্ঠার সুযোগ রেখে জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়েছে।
কোম্পানি আইন অনুযায়ী, বর্তমানে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি পরিচালিত হয় পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে।
এই পর্ষদ বা বোর্ডের পরিচালক ও চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। প্রস্তাবিত আইনের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘এক ব্যক্তির কোম্পানি’ হলো সেই কোম্পানি, যার বোর্ডে সদস্য থাকবেন কেবল একজন।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত ‘কোম্পানি (দ্বিতীয় সংশোধন) বিল- ২০২০’ সংসদে উত্থাপন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। পরে বিলটি পরীক্ষা করে ৩০ দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলটি সংসদে উত্থাপনের বিরোধিতা করেন বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম। তিনি এক ব্যক্তির সংজ্ঞা হিসেবে ‘একজন প্রাকৃতিক সত্ত্বাবিশিষ্ট ব্যক্তি’ স্পষ্ট করার দাবি করেন।
মন্ত্রিসভায় ব্যবসায়ীরা থাকায় এমন আইন করা হচ্ছে বলেও এসময় অভিযোগ তোলেন তিনি।
তবে বাণিজ্যমন্ত্রী বিষয়গুলো সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করা হবে বলে জানান। একই সঙ্গে তিনি নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তুলে ধরে বলেন, আমি দীর্ঘদিন রাজনীতি করি। কারো কাছে হাত পাতবো না বলে ব্যবসা করি। ছাত্রজীবন থেকেই আমি রাজনীতিতে আছি।
বিলটি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ ধরনের কোম্পানি আছে। দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য সরকার এই আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বিলে বলা হয়েছে, এক ব্যক্তি কোম্পানির পরিশোধিত শেয়ার মূলধন হবে অন্যূন ৫০ লাখ টাকা এবং অনধিক ১০ কোটি টাকা। অব্যবহিত পূর্ববর্তী অর্থবছরের বার্ষিক টার্নওভার অন্যূন দুই কোটি টাকা এবং ১০০ কোটি টাকা হবে।
পরিশোধিত শেয়ার মূলধন ও বার্ষিক টার্নওভার এর বেশি হলে শর্তপূরণ সাপেক্ষে এক ব্যক্তির কোম্পানিকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বা ক্ষেত্রমত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা যাবে।
এক ব্যক্তির কোম্পানিকে বছরে কমপক্ষে একটি পরিচালক সভা করতে হবে বলে বিলে বিধান রাখা হয়েছে।
পরিচালক ও প্রধান ব্যক্তি একজন থাকেন বলে এ ধরনের কোম্পানি পর্ষদ সভা করা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নিয়মের ছাড় পাবে। একমাত্র সদস্য মারা গেলে তার মনোনীত ব্যক্তি সব শেয়ারের মালিকানা পাবেন বলে প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে।
এ ধরনের কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে হস্তান্তরকারীর ব্যক্তিগত উপস্থিতি ও কমিশনের মাধ্যমে হস্তান্তর দলিলে স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।
বিলে বলা হয়েছে, কোম্পানি উঠে গেলে পাওনাদারদের ঋণ পরিশোধে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিলে কোম্পানি আইন সংশোধন করে অনলাইনের মাধ্যমে নিবন্ধনের বিধান রাখা হয়েছে। বর্তমান আইনে ১৪ দিনের নোটিশে বোর্ড মিটিং করার বিধান রয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে এটাকে ২১ দিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।