রাবি প্রতিনিধি: সারাদেশে চলমান ধর্ষণ প্রতিরোধ ও ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। এসময় চোখে কালো কাপড় বেঁধে ধর্ষকের প্রতীকি ফাঁসি শেষে দ্রোহের কবিতা পাঠ করা হয়।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে, আসিয়া, আছিয়া’, ‘একশন একশন, ডাইরেক্ট একশন’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্শকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্শকের ঠাঁই নাই’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ধর্ষকদের শাস্তি, মৃত্যু! মৃত্যু!’, ‘We Want Justice, no more rapist’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন? ইন্টারিম জবাব চাই’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
উক্ত কর্মসূচিতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাজিফা আনজুম মিম বলেন, ধর্ষকের কঠিন বিচার মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ইন্টারিম সরকার ধর্ষকের বিচারে ১৮০ দিনের টালবাহানা করছে, ততদিনে বাংলাদেশে আরও হাজার হাজার ইস্যু চলে আসবে এবং এটি ধামাচাপা পড়ে যাবে। আমরা যেমন তনুকে ভুলে গেছি, তেমনি ১৮০ দিনে আমরা আছিয়াকেও ভুলে যাবো। দ্রুত সম্ভব ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম সজিব বলেন, ধর্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজকের এই প্রতীকী ফাঁসি ও দ্রোহের কবিতা পাঠ আয়োজন। আমরা এই ফাঁসির মঞ্চ থেকে ইন্টেরিম সরকারকে একটা মেসেজ দিতে চাই যে, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করে। বর্তমান সরকারকে অনুরোধ করবো যে, ধর্ষণের তদন্তের জন্য যে ডিএনএ স্যাম্পেলিং মেশিন দরকার যেটা শুধু ঢাকায় আছে, সেটা প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে দেওয়া হয়৷
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আজকের এই মঞ্চকে আমরা বাংলাদেশের সকল ধর্ষকের ফাঁসির মঞ্চ হিসেবে রিপ্রেজেন্ট করতে চাচ্ছি। এখানে একটা দলকে এলিট শ্রেণী দেখে তাদের বিচারকার্য স্থগিত করা, র্যাব আলেপের বিচারকার্য এই ফাঁসির মঞ্চে সম্পন্ন করতে হবে, তেমনি আসিয়ার ধর্ষকের বিচারকার্য এই মঞ্চেই সম্পন্ন করতে হবে। পররাষ্ট্র ক্যাডারের বাবার বিচারও এই মঞ্চেই করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের ছেলে সায়েম সোবহান আনভীর সহ তনু হত্যায় জড়িত সেনাবাহিনী কর্মকর্তার ও বিচার করতে হবে। এই ফাঁসির মঞ্চ কোনো ধনী গরীব ভেদাভেদ করবে না। আমরা যেমন আছিয়ার ধর্ষকের জন্য সরব হচ্ছি, তেমনি যেন রোজাদার মহিলাকে ধর্ষণ করা আলেপের বিচারের জন্যও সরব হই।
উল্লেখ্য, প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।