নিউজ ডেস্ক : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি।তিনি বলেন, সার্বিকভাবে দেশের নির্বাচন ভালো হয়নি।আমরা এটি আশঙ্কা করেছিলাম। সরকার যেখানে চেয়েছে, নির্বাচন নিরপেক্ষ করেছে, আবার যেখানে চেয়েছে, তাদের প্রার্থীকে জিতিয়েছে। তাই এ কারণে নির্বাচনে কেউ আসতেও চায়নি। আন্তর্জাতিকভাবে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে কি না, তা আমি বলতে পারছি না। তবে আমার মূল্যায়নে সরকারের নিয়ন্ত্রিত এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার কথা না।সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকালে রংপুর নগরীর সেনপাড়াস্থ স্কাই ভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, নির্বাচনে আমরা আশানুরূপ ফল পাইনি। সরকার মিডিয়ার মাধ্যমে বার বার প্রচার করেছে, আমাদের আসন ছাড় দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে ওই ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র শক্তিশালী প্রার্থীকে রেখে দেওয়া হয়েছে। তাদের দল বহিষ্কার করেনি ও দলীয় লোকজন ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছে। সবার ধারণা, আমরা আওয়ামী লীগের বি টিম হয়ে কাজ করছি। সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এটি প্রচার করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করছেন না জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, কারণ এটি করার মতো আমাদের অবস্থা নেই। নির্বাচনে অংশ নেওয়া ভুল হয়েছে কি সঠিক হয়েছে, তা এখনই মূল্যায়ন করা যাবে না। সামনের দিনগুলো দেখে তারপর মূল্যায়ন করা হবে।আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ প্রশাসন, অস্ত্র-পেশী শক্তি ও অর্থের প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তারা সেই কথা রাখেনি। নির্বাচনের রাত থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের হয়রানি-হামলা করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন ১০টা থেকে ২টার মধ্যে সব ভোটকেন্দ্র দখল করে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের এজেন্টকে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে নৌকায় সিল মারা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন নীরব ছিল। আমরা অসহায় হয়ে পড়েছিলাম, যোগ করেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রংপুর-৩ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসন থেকে নির্বাচিত এ প্রার্থী।
তিনি আরও বলেন, আমরা সংসদে যাব না- এমন সিদ্ধান্ত নেইনি। নির্বাচন বর্জন করলে আমাদের দলে সমস্যা সৃষ্টি হতো, দলীয় রাজনীতি রক্ষায় আঘাত আসতে পারত। তাই তাদের বিশ্বাস করে নির্বাচনে এসেছি। নির্বাচনে বিশ্বাস কিংবা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আলাপ-আলোচনায় আসতে হয়। এছাড়া অন্য প্রক্রিয়া হলো যুদ্ধ করা, আমরা তো যুদ্ধের মাধ্যমে সমাধান করতে পারব না। বিশ্বাস করে এসেছি, কিন্তু তারা বিশ্বাস রক্ষা করেনি। তাই আগামীতে তাদের অন্য কেউ বিশ্বাস করবে না। তাদের গ্রহণযোগ্যতার বিপক্ষে কাজ করবে।জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, দল হিসেবে জাতীয় পার্টি যেখানে ছিল, সেখানেই রয়েছে। আমাদের ধ্বংস করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হবে- এটাই স্বাভাবিক। প্রতিদ্বন্দ্বীরা আমাদের দুর্বল করার চেষ্টা করবে, ধ্বংস করতে চাইবে। কিন্তু যেভাবে আমাদের ধ্বংস করার চেষ্টা করছে, সেই প্রক্রিয়া সঠিক হচ্ছে না। দেশবাসী ভবিষ্যতে আমাদের মূল্যায়ন করবে।জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ দলটির নেতাকর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।