শহীদুজ্জামান শিমুল: সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে টিফিন পিরিয়ডে স্কুলের ছাদে বন্ধুর জন্মদিনের কেক কেটে টিকটক করার অপরাধে শিক্ষকের চড় থাপ্পড়ের পর প্রতাপ চন্দ্র দাশ নামে নবম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা স্কুলে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আরও সাতটি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ দুই শিক্ষককে কাস্টডিতে নিয়েছে।তবে, স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই ছাত্র বাড়ি ফিরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে স্কুলের ছাদে কেক কাটে প্রতাপ চন্দ্র দাশসহ তার কয়েকজন বন্ধু। এ সময় তারা টিকটক ভিডিও করছিল। বিষয়টি নজরে পড়ে সহকারী শিক্ষক অবকাশ খাঁর। তিনি এগিয়ে গিয়ে সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিষেধ করলে শিক্ষার্থীরা তার সাথে তর্কে জড়ায়। এসময় তিনি তাদের চড় কিল ঘুষি মারেন। এর পরপরই বাড়ি চলে যায় প্রতাপসহ তার বন্ধুরা।প্রতাপের কাকীমা তাপসী দাশ জানান, প্রতাপ স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে টয়লেটে যায়। সেখান থেকে সে বমি করতে করতে বের হয়। তখন সে পরিবারের সদস্যদের তাকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে বলে। তাকে নিয়ে চিকিৎসকের উদ্দেশ্যে রওনা হলে পথেই মৃত্যু হয় তার।স্থানীয় আমিনুর রহমান জানান, তার কানে এমনভাবে চর কিল ঘুষি মেরেছে, যে সে বাড়ি ফিরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।এদিকে, প্রতাপের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার সহপাঠীসহ এলাকাবাসী বাড়ি থেকে মরদেহ নিয়ে স্কুল চত্বরে ফিরে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভে অংশ নেয়। তারা স্কুলের হেড মাস্টারের রুমসহ বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করে। সাতটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের পাশাপাশি পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি মোটরসাইকেল। খবর পেয়ে কালিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খায়। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এখনো সেখানে মরদেহ নিয়ে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করছে। সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান জানান, ইতোমধ্যে দুইজন শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।