নিউজ ডেস্ক : দেশের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয় (এনআইডি) নিবন্ধন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন পরিচালিত করতে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩’র খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (১২ জুন) মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।মন্ত্রিসভার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, গত বছরের ১০ অক্টোবর মন্ত্রিসভা এ ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল। আজ এটির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এ আইনের আওতায় এখন আমাদের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন পরিচালিত হবে। তাদের এই সংক্রান্ত একটা অফিস থাকবে। অফিসে একজন নিবন্ধক থাকবে এবং নিবন্ধকের মাধ্যমে এই কাজটি করা হবে।মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো- যেকোনো নাগরিক জন্মের পর পরই নাগরিক সনদ বা একটি নম্বর পাওয়ার অধিকারী হবেন। এটি অপরিবর্তিত হবে। এটি জন্মের সাথে সাথে নিতে পারবেন। এটা কোনো সময় পরিবর্তন করা যাবে না।নির্বাচন কমিশনের কাজ শুধু ভোটার তালিকা তৈরির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে; এমন প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, হ্যাঁ। ১৮ বছরের বেশি হলে নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে। এখানে যে এনআইডি থাকবে বা এনআইডি প্রাপ্ত যে জনসংখ্যা থাকবে তাদের মধ্য থেকে এই নম্বর ব্যবহার করে তারা করতে পারবে। যে সার্ভার আছে তা নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সেটি আলাদা করা একটি জটিল প্রক্রিয়া। ডাটাবেজ স্থানান্তর কীভাবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই আইন অনুযায়ী এনআইডি সংক্রান্ত তথ্যাদি ওখান থেকে নিয়ে আমাদের যে নতুন নিবন্ধক থাকবেন, তার দপ্তরে স্থানান্তরিত হবে। বর্তমানে যে নম্বরগুলো নির্বাচন কমিশনের অধীন আছে সেগুলো চলমান থাকবে।ভোগান্তি দূর করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, এনআইডির ভুল থাকলে কীভাবে সংশোধন হবে, সেগুলো সহজ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে জনবল লাগবে তারা তা নেবেন। সেভাবে অর্গানোগ্রাম তৈরি করবেন।যাদের এখনও জন্ম নিবন্ধন বা এনআইডি হয়নি তাদের বিষয়টি কী হবে জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, তারা এখন থেকে নতুন নম্বর নেবেন। এখন থেকে সব জায়গায় এই নম্বরটি ব্যবহার হবে। যখন সে এই নম্বরটি পেয়ে যাবে তখন আর কোনো নম্বর লাগবে না।মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আইনের অধীনে একটি নিবন্ধকের অফিস থাকবে। নিবন্ধকের অফিস নিবন্ধনের কাজটি করবে। এজন্য যে ধরনের যন্ত্রপাতি দরকার তা সরকার দেবে।নিবন্ধকের অফিসের জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে অফিস থাকে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রতিষ্ঠানটি যখন দাঁড়াবে তখন তারা বিধি দ্বারা ঠিক করে নেবে। যদি তারা মনে করে প্রত্যেক জায়গায় অফিস দরকার তা তারা করবে।মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য সব নাগরিকের একটি ইউনিক নম্বর থাকা দরকার। এতদিন হয়তো বিভিন্ন ধাপে নম্বরগুলো দিয়েছি। যেটা নিয়ে এখন অনেক সময় কনফিউশন তৈরি করছে অনেক সময়। এখন প্রত্যেক নাগরিকের একটি নম্বর থাকবে, যেটি তার আইডেন্টিটি হবে। সেটার ভিত্তিতে তার সারা জীবনে, আমাদের যেমন সিআরপিসি তথ্য আছে সেগুলো আপডেট করবে। এটা ধীরে ধীরে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করবো। নির্বাচন কমিশন থেকে জনবল স্থানান্তর করা হবে কিনা, কারণ নতুন লোকবল তো বিষয়টি বুঝবেন না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আপনি (সাংবাদিক) কেন অ্যাজামশন করছেন তারা দক্ষ হবে না। অভিজ্ঞ লোকজনই তো নিয়োগ করা হবে। ইতোমধ্যে আমাদের লোক তৈরি হয়েছে। অভিজ্ঞ লোক তো অবশ্যই লাগবে, তাদেরকেই নিয়োগ দেওয়া হবে।নির্বাচনের আগেই কি সংসদে আইনটি পাস করা হবে? প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেটি বলতে পারবো না। প্রক্রিয়া শেষ করে সংসদে নিয়ে যাওয়া হবে। সংসদ সেটি সিদ্ধান্ত নেবে।সংসদে আইন পাস হলেই কী কার্যকর হবে কিনা প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জাতীয় সংসদে পাস হলেই কার্যকর হবে না। আইনে একটি বিধান রাখা হয়েছে সরকার নির্ধারিত তারিখ থেকে কার্যকর হবে। অর্থাৎ আইনের গেজেট প্রকাশ হলেই হবে না, সরকার যেদিন থেকে কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করবে সেদিন থেকে কার্যকর হবে।