আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক টাইফুন আঘাত হানতে শুরু করেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। ‘হিন্নামনোর’ নামে ঝড়টির প্রভাবে দেশটির দক্ষিণ অঞ্চলে প্রায় এক মিটার (৩ ফুট) বৃষ্টিপাত হয়েছে।এ অবস্থায় সেখানকার হাজারো নাগরিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অঞ্চলটির বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।কাতারের সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, টাইফুন হিন্নামনোর জেজু দ্বীপে আঘাত হেনেছে। এর প্রভাবে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে বুসান বন্দরের কাছে ভূমিধ্বস হয়েছে।স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, মঙ্গলবার অঞ্চলটিতে সারাদিন ভারী বৃষ্টিপাত ও প্রবল বাতাস অব্যাহত থাকবে।দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হান ডুক-সু ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হিন্নামনোর ঐতিহাসিকভাবে একটি শক্তিশালী টাইফুন, যা আমরা আগে কখনো দেখিনি।হিন্নামনরের প্রভাবে দেশটির বেশিরভাগ জায়গায় রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। জেজুতে ৯৪ সেন্টিমিটারের (৩৭ ইঞ্চি) বেশি বৃষ্টিপাত হয়। বাতাসের গতি ছিল ১৫৫ কিলোমিটার (ঘণ্টায় ৯৬ মাইল)। প্রবল বাতাসে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। দক্ষিণের জেলাগুলোর প্রায় ২০ হাজার ঘরবাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ঝড়ের প্রভাবে জেজু দ্বীপ ও বুসান বন্দরের ৩ হাজার ৪৬৩ জনের বেশি নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা আরও ১৪ হাজার নাগরিককে তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলেছেন।ঝড়ের কারণে সৃষ্ট বন্যায় ভেসে গিয়ে উলসান শহরে ২৫ বছর বয়সী এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।সিডেন্ট ইউন সুক-ইওল ঝড় মোকাবিলায় সভার আহ্বান করেছেন। টাইফুন হিন্নামনোর পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন।ঝড়ের প্রভাবে ৬০০টির বেশি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে অনলাইন ক্লাস। বাতিল করা হয়েছে শত শত ফ্লাইট ও কয়েক ডজন ফেরি পরিষেবা। বন্দরে মাছ ধরার নৌকা নোঙর করে রাখা হয়েছে।আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, টাইফুনটি ঘণ্টায় ১৪৪ কি.মি (৮৯ মাইল) বেগে সমুদ্রের উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি জাপানী দ্বীপ হোক্কাইডো থেকে প্রায় ৪০০ কি.মি. (২৪৯ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।