আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি।রোববার (০৩ এপ্রিল) সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিনি এ সুপারিশ করেন।রাষ্ট্রপতির সচিবালয় থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে সংবিধানের ৫৮ (১) ও ৪৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি। এর আগে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দেন ইমরান।সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৫৮ অনুযায়ী, পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিতে পারেন। যদি তা না হয় তবে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শের ৪৮ ঘণ্টা পরে সংসদ ভেঙে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।রোববার সকালে জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেন। সংবিধানের ৫ নং অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অভিহিত করে প্রস্তাবটি খারিজ করেন তিনি।এর কয়েক মুহূর্ত পরে প্রধানমন্ত্রী ইমরান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। এ সময় তিনি জানান, প্রেসিডেন্টকে চিঠি লিখে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিরোধী দলসহ সবাইকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে আহ্বান জানান তিনি।ইমরান বলেন, নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন। দেশের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা কোনো দুর্নীতিবাজ শক্তি নির্ধারণ করে দিতে পারে না। যখন সংসদ ভেঙে দেওয়া হবে, তখন পরবর্তী নির্বাচন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ফারুখ হাবিব। সামাজিক মাধ্যম টুইটারে তিনি বলেন, ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।এদিকে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিবাদ জানিয়েছে বিরোধী দলগুলো। তারা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।গত ৮ মার্চ অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে ইমরান খানের জোট সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো।একপর্যায়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ শরিক মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) বিরোধী শিবিরে যোগ দিলে জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় ইমরানের দল। এরপর ইমরানের প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর বিষয়টি কেবল সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তবে শেষ মুহূর্তে দেশটির রাজনীতিতে নাটকীয় পরিবর্তন দেখা গেল।