মিঠুনের পর দ্রুত ফেরেন সিলেটের অধিনায়ক রবি বোপারা। ইংলিশ অলরাউন্ডারকে (৯) স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন সাকিব। কিন্তু অন্যপ্রান্তে ঠিকই রানের ফোয়ারা ছোটাচ্ছিলেন ইনগ্রাম। এই কিউই ব্যাটার সিলেটকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন দারুণ কিছুর। কিন্তু ব্যাটার থেকে বোলার বনে যাওয়া শান্তর বলে ক্যাচ তুলে দিলে শেষ হয় তার ঝড়ো ৯০ রানের ইনিংস। ৪৯ বল খেলে এই রান করার পথে তিনি ১৬টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন।
ইনগ্রাম বিদায় নিতেই ম্যাচ থেকে একপ্রকার ছিটকে যায় সিলেট। যদিও ২১ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ রান করে মোসাদ্দেক হোসেন এবং আলাউদ্দিন বাবু ১২ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে কিছুটা চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু এতে শুধু হারের ব্যবধানই কমানো গেছে।
বল হাতে ৪ ওভারে ২৩ রান খরচে ২ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। ব্র্যাভোও সমান উইকেট নিয়েছেন, তবে খরচ করেছেন ৪২ রান। কিন্তু শান্ত মাত্র ১ ওভার বল করে ২ রানে ২ উইকেট তুলে নিয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু পায় বরিশাল। দুই ওপেনার মিলে ৭২ রানের জুটি গড়েন। ৬.৪ ওভার স্থায়ী এই জুটিতে শক্ত ভিত পায় দলটি। তবে এই রান তোলার পেছনে বড় ভূমিকা কিন্তু গেইলের নয়, তরুণ ওপেনার মুনিমের। এই ডানহাতি ব্যাটার শুরু থেকে আক্রমণাত্মক শটের পসরা সাজিয়ে বসেন। মাত্র ২৬ বলে বিপিএলে নিজের প্রথম ও সবমিলিয়ে তৃতীয় ফিফটির দেখা পান তিনি। দেশিদের মধ্যে এবারের আসরে দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরি এটি।তবে এর ১ বল পরেই সোহাগ গাজীর বলে মোসাদ্দেক হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মুনিম। মাত্র ২৮ বল মোকাবিলা করে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় মুনিমের সংগ্রহ ৫১ রান। অন্যপ্রান্তে গেইল তখন ১১ বলে মাত্র ১৪ রানে ব্যাট করছিলেন। এরপর নুরুল হাসান সোহান তিনে নেমে মাত্র ২ রান করেই নাজমুল ইসলামের শিকার হন। চারে নেমে সাকিব আল হাসান প্রথম দুই ওভার দেখেশুনে খেললেও তৃতীয় ওভারে সোহাগ গাজীর বলে ২ ছক্কা ও ১ চার হাঁকান। ওই ওভারে আসে ১৯ রান। মোসাদ্দেকের করা পরের ওভারেও সাকিব এক ছক্কা ও ১ বাউন্ডারি হাঁকান। দারুণ খেলতে থাকা সাকিব ১৩তম ওভারে আলাউদ্দিন বাবুর বলে ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই লং অনে ক্যাচ তুলে দেন। বরিশাল অধিনায়ক মাত্র ১৯ বলের মোকাবিলায় ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৮ রান করেন। এরপর তৌহিদ হৃদয় মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকান। ১৬তম ওভারে সিরাজ আহমেদের বলে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে ‘ঘুম’ ভাঙে গেইলের। কিন্তু পরের ওভারেই হৃদয় (১০) বিদায় নেন। ফলে ভেঙে যায় সম্ভাব্য ভালো জুটি।
হৃদয় বিদায় নেওয়ার পর কিছুটা গুঁটিয়ে যান গেইল। কিন্তু তার স্বদেশী ডোয়াইন ব্র্যাভো ১৯তম ওভারে দুই ছক্কা হাঁকান। এর মাঝেই ৪৩ বলে ফিফটির দেখা পান গেইল। সবমিলিয়ে ২৮ ইনিংস পর ফিফটির দেখা পেলেন ‘ইউনিভার্স বস’। সর্বশেষ ২০২১ সালের জুলাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬৭ রান করেছিলেন তিনি। এবারের ফিফটি তার ক্যারিয়ারের ৮৮তম।
ব্র্যাভোর দুই ছক্কায় ১৯তম ওভারে আসে ১৫ রান। এরপর শেষ ওভারেও ফের ব্র্যাভো ঝড়। সিরাজের করা ওই ওভারের চতুর্থ দুই ছক্কা ও ১ চার হাঁকিয়ে দলকে দুইশ ছুঁইছুঁই সংগ্রহে নিয়ে যান ব্র্যাভো। শেষ পর্যন্ত ১৩ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৪ রানে ব্র্যাভো এবং ৪৫ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৫২ রানে তার স্বদেশী গেইল অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। বল হাতে সিলেটের সোহাগ গাজী, স্বাধীন, আলাউদ্দিন বাবু এবং নাজমুল ১টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব।