প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হত্যা প্রক্রিয়ায় শুরুতে দলের ভেতরেই চক্রান্ত হয়েছিলো। পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক সমালোচনার মাধ্যমে হত্যার পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিলো বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার ( ২৩ আগস্ট) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির আয়োজনে জাতির পিতার ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে এতে যোগ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করা গণহত্যাকারী, নারী ধর্ষণকারীদের এমপি, মন্ত্রী বানিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছিল জিয়া। তিনি জাতির জনকের হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেন। জিয়ার মতোই স্বাধীনতাবিরোধী ও জাতির পিতার হত্যাকারীদের মদদ দিয়েছেন বেগম জিয়া।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে আমাদের একটাই লক্ষ্য থাকবে, যাতে দেশের একটি মানুষও গৃহহীন না থাকে। প্রতিটি মানুষকে অন্তত আমরা একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেব। এ সময় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ঘটনা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দেশের দায়িত্ব নিয়ে তিনি যেভাবে দেশকে পরিচালনা করছিলেন, তখন প্রয়োজন ছিল দেশের সব মানুষের একাত্ম হয়ে তার পাশে দাঁড়ানো এবং সহযোগিতা করা। বারবার আস্থা রেখে ভোট দিয়ে দেশের সেবা করার সুযোগ দেয়ায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপির মদদে ২১ আগস্টে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গিয়ে সন্ত্রাসের শিকার হয়েছি আমি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বলেন, যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, একটি জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, এ দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছিলেন তাকেই কিনা খুনিরা হত্যা করল। তিনি বলেন, পাকিস্তানিরা জাতির পিতাকে হত্যা করতে পারেনি। কিন্তু জাতির পিতার যাদের প্রতি বিশ্বাস ছিল, ভালোবাসা ছিল, তারাই জাতির পিতাকে হত্যা করে বিশ্বাসঘাতকতা করলো।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শোকাবহ যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করার পর সূচনা বক্তব্য রাখেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এরপর বঙ্গবন্ধুর কর্মময় ও সংগ্রামী জীবনের উপরে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন এমপি আসাদুজ্জামান নূর। এবং আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।