নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ

নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ
শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক  :  সাহিত্যাঙ্গনে কিংবদন্তি এক নাম। পাঠক মুগ্ধ করার জাদুকর তিনি।নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণেও সফল, ভিন্ন এক ধারার প্রবর্তক। গান লেখাতেও হয়ে আছেন কালজয়ী গীতিকবি। তিনি হুমায়ূন আহমেদ। সবার প্রিয় হুমায়ূন স্যার।জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের আজ ৭৪তম জন্মদিন।১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় তার জন্ম। তার ডাক নাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজ। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা, আর মা গৃহিণী। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার অন্য দুই ভাইও বরেণ্য ও প্রতিভাবান। কথাসাহিত্যিক জাফর ইকবাল তার ছোট ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক।নেত্রকোনার এই সন্তানটি লেখার জাদুতে যেমন আলোড়ন তুলেছেন, তেমনি সৃজনশীলতার সব শাখাতেই পাঠক ও দর্শকদের নিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়েছেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) রসায়ন বিভাগের এই অধ্যাপক ‘নন্দিত নরকে, লীলাবতী, কবি, শঙ্খনীল কারাগার, গৌরিপুর জংশন, নৃপতি, বহুব্রীহি, এইসব দিনরাত্রি, দারুচিনি দ্বীপ, শুভ্র, নক্ষত্রের রাত, কোথাও কেউ নেই, আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের দিন, জোছনা ও জননীর গল্প, এমন ঝড় তোলার মতো উপন্যাস উপহার দিয়েছেন আমাদের। তার বইয়ের সংখ্যা ৩শ’রও বেশি।প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়েই সাড়া ফেলেন বিজ্ঞানের ছাত্র হুমায়ূন আহমেদ। হুমায়ূনের উপন্যাসের নাট্যরূপ ধারাবাহিকভাবে টেলিভিশনে প্রচারিত হলে সেখানেও দর্শকদের সাড়া। হুমায়ূন যখন চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন তা দেখতেও শহর ভেঙে পড়ে। হুমায়ূন আহমেদ চলচ্চিত্র আগুনের পরশমণি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, নয় নম্বর বিপদ সংকেত ও ঘেটুপুত্র কমলা সবগুলোই ছিল দর্শকপ্রিয় ও ব্যবসা সফল।চলচ্চিত্র বা নাটকের জন্য হুমায়ূন আহমেদ গান লিখেছেন, আবার তাতে সুরও দিয়েছেন, তা সমাদৃত হয়েছে।‘যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো ’, ‘চাঁদনী পসরে কে’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’, ’এক যে ছিল সোনার কন্যা’, ‘আমার ভাঙ্গা ঘরে ভাঙ্গা বেড়া ভাঙ্গা চালার ফাঁকে’, ‘চাঁদনী পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়’ হ‌ুমায়ূন আহমেদের লেখা এসব গান আজো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।  বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক `একুশে পদক` লাভ করেন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন।তিনি আমাদের ছেড়ে যান ২০১২ সালের ১৯ জুলাই। মরণব্যাধি ক্যানসারের চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর সেখানেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মাত্র ৬৪ বছর বয়সেই তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। সেখান থেকে মরদেহ ঢাকায় আনার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে লাখো মানুষের অশ্রু পুষ্পতে সিক্ত হন তিনি।২৪ জুলাই নুহাশপল্লীর লিচুতলায় চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। সেদিন গভীর শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল তার লাখো ভক্ত অনুরাগী। হুমায়ূন আজো বেঁচে আছেন লাখো পাঠকের হৃদয়ে হৃদয়ে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন