চট্টগ্রাম: ‘অনেক বছর ধরে এভাবে হাঁটু সমান পানিতে মরদেহ দাহ করতে হচ্ছে। চাক্তাই খালসংলগ্ন অভয়মিত্র মহাশ্মশানটি একটু নিচু হওয়ায় প্রতিদিনই জোয়ারের পানি উঠছে।
বৃষ্টির সময় পানি আরও বেড়ে যাওয়ায় দাহ করার জন্য আনা মরদেহ রাখার জায়গা থাকে না। অনেক সময় জোয়ার-ভাটা দেখে মরদেহ সৎকারের সময় নির্ধারণ করতে হয়। ’
শনিবার (২২ আগস্ট) নগরের বলুয়ার দীঘি অভয়মিত্র মহাশ্মশান পরিদর্শনে এলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনকে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানান।
শতবর্ষী এ শশ্মানে হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে মরদেহ দাহ করার ছবি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে এলে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুদান দেন।
চসিক প্রশাসক বলেন, মাটি ভরাট করে অভয়মিত্র মহাশ্মশান উঁচু করা হলে জোয়ারের পানি আর ঢুকতে পারবে না। জলাবদ্ধতা না থাকলে সনাতন সম্প্রদায় তাদের আপনজনের মৃতদেহ সৎকার যথাযথ ধর্মীয় নিয়মনীতি অনুসরণ করে নিরাপদে ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবে। এজন্য তিনি চসিক পরিচালিত এই মহাশ্মশানের জন্য ত্বরিৎ পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, শুক্রবার আমাদের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সুযোগ্য সন্তান মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এ মহাশ্মশানের জন্য অনুদান পাঠিয়েছেন। আগামীতে বলুয়ারদীঘি অভয়মিত্র মহাশ্মশানের সার্বিক উন্নয়নেও তিনি পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। আমাদের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী থাকলে হয়তো এতদিনে এই দুদর্শা থাকতো না। তিনি অনেক আগেই এই মহাশ্মশানের জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতেন। যে অনুদান পাওয়া গেছে তাতে সাময়িক কষ্ট লাঘব হলেও এর জন্য চাই পরিকল্পিত ও কার্যকর পদক্ষেপ।
প্রশাসক বলেন, যেহেতু মহাশ্মশানটি চসিকের পরিচালনাধীন। তাই একটি সুন্দর পরিকল্পিত মহাশ্মশান করার জন্য আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নেব। এ মহাশ্মশানের উন্নয়নের জন্য যা যা করা প্রয়োজন তাই করবো আমরা। এজন্য সব মহলের মতামত ও পরামর্শ নেওয়া হবে। আমাদের এমনভাবে মহাশ্মশানটি সংস্কার করতে হবে যাতে পাশের এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা দেখেছি মহাশ্মশান উঁচুকরণ ও সংস্কারের জন্য প্রতিবছর নানা উদ্যোগ হাতে নেওয়া হতো। কিন্তু বাস্তবায়ন কিছুই হয়নি। মহাশ্মশানের পেছনে বয়ে যাওয়া চাক্তাই খালে স্লুইসগেট স্থাপন করলে জোয়ারের পানি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এতে করে জোয়ারের সময় স্লুইসগেট বন্ধ করলে শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারে জলদুর্ভোগ সমস্যা নিরসন হয়ে যাবে। তবে এখন আর সময় নষ্ট করার সময় নেই। আশা করছি খুব শিগগির মহাশ্মশানটির উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করব।
এ সময় প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা, অভয়মিত্র মহাশ্মশান পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, সাধারণ সম্পাদক বিজয় কিষান চৌধুরী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর পেয়ার মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট তপন দাশ, কাউন্সিলর প্রার্থী রুমকী সেনগুপ্ত, ইঞ্জিনিয়ার আশুতোষ দাশ, অজয় বণিক, টুনটুন চক্রবর্তী, কুতুব উদ্দিন সেলিম, আবু জাফর চৌধুরী, সেকান্দর আলী, রফিকুল আলম বাপ্পী উপস্থিত ছিলেন।