শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের ৩৬ নম্বর বেডে আটদিন ধরে চিকিৎসাধীন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মল্লিকা আকতার মলি নামের একশিশু। মল্লিকা রাজধানীর কল্যাণপুরের দোতলা মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় বাবা মার সঙ্গে থাকে।
মল্লিকার মা নাজমা আকতার বলেন, চিকিৎসক বলেছেন মল্লিকার বর্তমান অবস্থা অনেকটাই ভালো। আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। তবে মেয়ে হাসপাতালে থাকতে চায় না, দ্রুত বাড়ি যেতে চায়।
ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ শফি আহমেদ বলেন, ২০১৯ সালে এখানে একদিনে সর্বোচ্চ ৬৯ জন রোগী ভর্তি ছিল। কিন্তু আজ (২১ আগস্ট) রেকর্ড ৮০ জন রোগী ভর্তি আছে। এরমধ্যে ১৪ জন আইসিইউতে আছেন। জুন মাস থেকে এ পর্যন্ত ছয় জন রোগী মারা গেছেন। আমরা দেখছি ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। বাচ্চারা ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। সুতরাং অভিভাবকদের ডেঙ্গু বিষয়ে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।
তিনি জানান, চলতি আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে দেখা যায়, দ্বিতীয় সপ্তাহে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা কম ছিল। তৃতীয় সপ্তাহে আবারও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট এক হাজার ২০৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার ১১৯ জন এবং অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে সর্বমোট ৮৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট সাত হাজার ৭৫০ জন। একই সময়ে তাদের মধ্য থেকে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড় পেয়েছেন ছয় হাজার ৫০৯ জন রোগী। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৫ জনের মৃত্যুর হয়েছে।
এর আগে বিগত ২০১৯ সালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেব মতে ওই বছর দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল এক লাখের বেশি মানুষ। সরকারি হিসেবে তখন ডেঙ্গুতে মারা যায় ১৭৯ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা ৩০০ জনেরও বেশি।