হাসপাতালে আর বেড বাড়ানোর জায়গা নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

হাসপাতালে আর বেড বাড়ানোর জায়গা নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতালগুলোতে যতটুকু বেড বাড়ানো দরকার আমরা বাড়িয়েছি। হাসপাতালগুলোর ভেতরে আর একটা বেড বাড়ানোর জায়গা নেই।রোববার (০১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে বিসিপিএস মিলনায়তনে আয়োজিত ‘প্রথম বর্ষ এমবিবিএস ক্লাস (সেশন-২০২০-২১)’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখনও আমরা জায়গা, ভবন খুঁজছি। কিন্তু পাচ্ছি না। ভবন পাওয়া গেলেই তো হবে না, ডাক্তার থাকতে হবে, নার্স থাকতে হবে, যন্ত্রপাতি থাকতে হবে। আমরা সেটারও চেষ্টা করছি।তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ এখনও ঊর্ধ্বমুখী। দক্ষিণাঞ্চলে চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লায় এখনও করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। তবে উত্তরবঙ্গে করোনা সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি সেবা দেওয়ার জন্য।স্বাস্থমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন করোনায় দুই শতাধিক লোকের মৃত্যু হচ্ছে। ১০ হাজারের উপরে লোক আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা মৃত্যু ও সংক্রমণ কমিয়ে আনতে চাই। কিন্তু সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানি তবে করোনার সংক্রমণ কমবে না। আপনারা জানেন সংক্রমণ হলে তার ১ দশমিক ৬ শতাংশ মৃত্যু হয়।জাহিদ মালেক আরও বলেন, আমাদের জীবন-জীবিকা দুটোই করতে হবে। আবার জীবিকার জন্য জীবনও থাকতে হবে। দুটির ব্যালান্স আমাদের করতে হয়। কিন্তু ব্যালান্স সবসময় রাখা যায় না।তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশই খুলে দেওয়া হয়েছিল, লকডাউন তুলে নেওয়া হয়েছিল, আবার বিধি-নিষেধের আওতায় আনা হয়েছে। কিছুদিন আগে দেখলাম অস্ট্রেলিয়ায় কারফিউ দেওয়া হয়েছে। আমেরিকাতে মাস্ক তুলে দিয়েছিল, আবার মাস্ক বাধ্যতামূলক করেছে। অনেক জায়গাতে ইন্ডাস্ট্রি খুলে দেওয়া হয়েছিল, আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইউরোপের একই অবস্থা, সেজন্য আমাদেরও সাবধানে এগুতে হবে। সক্রমণ বাড়লে মৃত্যুর হার বাড়বে।চলমান বিধি-নিষেধ বাড়ানোর বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতামত রয়েছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিধি-নিষেধ তো থাকতে হবে। আমরা তো এখনও করোনা ফ্রি হইনি। করোনা সংক্রমণ এখনও ঊর্ধ্বমুখী। বিধি-নিষেধ থাকতে হবে, বিধি-নিষেধ মেনেই কাজ করতে হবে। আমরা টিকার কর্সসূচি শুরু করেছি।তিনি আরও বলেন, আগামী ৭ আগস্ট থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে করোনা টিকাদানের কেন্দ্র করা হবে। একটি কেন্দ্রে তিনটি বুথ থাকবে। সারাদেশে ১ সপ্তাহে এক কোটির বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।করোনাভাইরাসে বয়স্করাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন, তারাই মারা যাচ্ছেন বেশি উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা মৃত্যুর হার কমাতে চাইছি। তাই এই কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি। বয়স্করা যদি শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েও টিকাদান কেন্দ্রে আসেন তাদের টিকা দেওয়া হবে। যদি কারো কোনো আইডি কার্ডও না থাকে তবে বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের টিকা দেওয়া হবে।করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও গত ২ এপ্রিল যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন। এতে ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৫৬ জন ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষায় ৪৮ হাজার ৯৭৫ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন।অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবিব, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিঞা, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমএনডিসি) সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ বি এম মাকসুদুল আলম, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুবিন খান প্রমুখ।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

১৬৯ কর্মচারিকে চাকরিচ্যুত করলো রাসিক

মেহেন্দিগঞ্জ পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কর্মসূচি-৩ পরকল্পের চেক বিতরণ