লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাই-ইথ্যালামাইড বা এলএসডি এক ধরনের তরল। সাধারণত ব্লটিং পেপারের ওপরে এই তরল মাদক ফেলে সেই কাগজ শুঁকে নেশা করেন মাদকাসক্তরা। এলএসডি মাখা কাগজের এক-একটি ছোট টুকরো বা ব্লটিং পেপারের দাম কয়েক হাজার টাকা। ডিবির হাতে গ্রেফতাররা জানায়, প্রতিটি ব্লটিং পেপার তিন থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হতো।
১৯৩৮ সালে সুইস রসায়নবিদ আলবার্ট হফম্যান প্যারাসাইটিক ফাঙ্গাস নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এলএসডি আবিষ্কার করেন। আবিষ্কারের প্রথমদিকে এলএসডি ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হতো। তবে, ওষুধটি মস্তিষ্কের ক্ষতি করে বলে পরে এটিকে নিষিদ্ধ করা হয়।
এই মাদক এতটাই শক্তিশালী যে ডোজগুলো মাইক্রোগ্রাম পরিমাণে নিতে হয়। এটি গন্ধহীন, বর্ণহীন এবং কিছুটা তেতো স্বাদের হয়। আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন ড্রাগ এবিউজের (এনআইডিএ) তথ্যানুযায়ী, এলএসডি আমেরিকায় নিষিদ্ধ। এর কোনো মেডিক্যাল ব্যবহার নেই, অর্থাৎ নেশাদ্রব্য হিসেবেই এটি তৈরি হয়।
এলএসডির প্রতিক্রিয়া
বিজ্ঞানীরা জানান, সাধারণত এলএসডি নেওয়ার পর একজন মানুষ চোখ বন্ধ করেও দেখতে পায়। তার দেখা এসব দৃশ্য সবসময় বাইরের পৃথিবী বা স্মৃতি থেকে আসে না বরং তাদের কল্পনাশক্তি অনেক বেড়ে যায়। এলএসডির প্রভাবে মস্তিষ্কের অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এলএসডি নেওয়ার পর প্রকৃতি ও বাইরের জগতের সঙ্গে এমন এক সম্পর্ক অনুভূত হয় যাকে অনেকটা ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক রূপ দেওয়া হয়ে থাকে। এই মাদকের প্রভাব কেটে গেলেও ওই রকম অনুভূতি থেকে যেতে পারে। এলএসডি ব্যবহার করলে মানুষের স্মৃতির ভাণ্ডার খুলে যায়। শোনা যায়, নেশার চূড়ান্ত পর্যায়ে কেউ কেউ মাতৃগর্ভের স্মৃতিও মনে করতে পারেন। তবে, সেসব স্মৃতির ভার অধিকাংশ মানুষই সহ্য করতে পারেন না। ফলে মস্তিষ্ক বিকৃতির প্রবল সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া অধিকাংশ মাদকগ্রহণকারীই স্মৃতির চূড়ান্ত স্তরে প্রবেশের আগে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন, হ্যালুসিনেশনই এসব অনুভূতির মূল কারণ।