ত্রিপুরায় বাঁশ খাতের উন্নয়নে কাজ করছে এফআরসিএলই

ত্রিপুরায় বাঁশ খাতের উন্নয়নে কাজ করছে এফআরসিএলই
আগরতলা (ত্রিপুরা): ভারতে ১৪০টির বেশি প্রজাতির বাঁশ পাওয়া যায়। উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রায় ৯২ প্রজাতির বাঁশ জন্মে এবং ত্রিপুরা রাজ্যে পাওয়া যায় ২১ প্রজাতির বাঁশ।ভারত সরকারের জীবিকা সম্প্রসারণ এবং বন গবেষণা কেন্দ্র (এফআরসিএলই)-এর ত্রিপুরা সেন্টার রাজ্যের বাঁশ খাতের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সংস্থাটি রাজ্যে নতুন ৯টি প্রজাতির বাঁশ নিয়ে এসেছে। সব মিলিয়ে এখন ত্রিপুরা রাজ্যে মোট ৩০ প্রজাতির বাঁশ রয়েছে।   এসব তথ্য জানান এফআরসিএলই ত্রিপুরা সেন্টারের প্রধান পবন কুমার কৌশিক।  তিনি জানান, সম্প্রতি তারা উত্তর-পূর্ব ভারতের সিকিম, মিজোরামসহ অন্যান্য আরও কয়েকটি জায়গা থেকে বাঁশের নতুন প্রজাতি নিয়ে এসেছেন ত্রিপুরায়।এরমধ্যে একটি হলো- ডেন্ড্রোক্যালামাস জিগ্যান্তিয়াস। যেগুলো ১০০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এই প্রজাতির বাঁশে ফুল আসে গড়ে ৭৬ বছর পর পর। নির্মাণ কাজ, পাইপ হিসেবে, জিনিসপত্র রাখার পাত্র হিসেবে, আসবাবপত্রসহ গৃহস্থালী সামগ্রী এবং কাগজ শিল্পে এর ব্যবহার হয়। এর কোড়ল খাবার হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।ডেন্ড্রোক্যালামাস সিক্কিমেনসিস প্রজাতির বাঁশও এনেছে এফআরসিএলই। এগুলো দেখেতে কমলা রঙের হয়ে থাকে এবং একটি পূর্ণ বয়স্ক বাঁশ ৬০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। গড়ে ৬০ থেকে ৬৫ বছরে এগুলোতে ফুল আসে। আগরবাতির শলা, খেলনাসহ গৃহস্থালীর কাজে এই বাঁশ ব্যবহার করা হয়।আরও একটি প্রজাতির বাঁশ ত্রিপুরা রাজ্যে নিয়ে এসেছে এফআরসিএলই। এই প্রজাতির নাম ডেন্ড্রোক্যালামাস লেটিফ্লোরাস। এই প্রজাতির বাঁশের কোড়ল মূলত খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং এগুলো দিয়ে সুস্বাদু বিভিন্ন পদের খাবার তৈরি করা হয়। এছাড়াও এই বাঁশ নির্মাণ কাজে, পাইপ হিসেবে, জিনিসপত্র রাখার পাত্র হিসেবে, আসবাবপত্রসহ গৃহস্থালী সামগ্রী, নৌকা তৈরি এবং কাগজ শিল্পে এর ব্যবহার হয়। এগুলো ৬০ থেকে ৮০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে ফুল ধরে। সম্প্রতি রাজ্যে বাঁশের নতুন প্রজাতিগুলোর কিছু বীজ আনা হয়েছে এবং কিছু প্রজাতির কাটিং আনা হয়েছে। এগুলো থেকে এখন আগরতলার গান্ধীগ্রাম এলাকার এফআরসিএলই সেন্টারে চারা তৈরি করা হচ্ছে।  সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, কিছু কিছু প্লাস্টিকের ট্রের মধ্যে চারা করা হচ্ছে, আবার কিছু কিছু বীজ ও কাটিং মাটিতে লাগানো হয়েছে। এগুলো থেকে ছোট ছোট চারা বেরিয়ে আসছে। পরবর্তী সময়ে এগুলো চাষিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।  যেহেতু এগুলো উত্তরপূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আনা হয়েছে তাই স্বাভাবিক ভাবে ত্রিপুরাতেও বেড়ে উঠবে এবং বংশ বিস্তার করবে বলে জানান পবন কৌশিক।ত্রিপুরা রাজ্যে আদিকাল থেকে যেসব বাঁশের প্রজাতি পাওয়া যায় এদের মধ্যে কোনো প্রজাতির বাঁশের অস্তিত্ব সঙ্কটের আশঙ্কা আছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজ্যের কোনো প্রজাতির বাঁশের অস্তিত্ব সঙ্কটে নেই। বাঁশ নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দিন দিন বাঁশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে এফ আর সি এল ইর আনা নতুন প্রজাতির বাঁশ রাজ্যকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

১৬৯ কর্মচারিকে চাকরিচ্যুত করলো রাসিক

মেহেন্দিগঞ্জ পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কর্মসূচি-৩ পরকল্পের চেক বিতরণ