লকডাউনে সড়কে রাজত্ব রিকশার

লকডাউনে সড়কে রাজত্ব রিকশার
ঢাকা: করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় সারাদেশে চলছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। কিন্তু লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে নানা অজুহাতে সড়কে যানবাহনসহ বেড়েছে সাধারণ মানুষের চাপ।তবে ঢাকার সড়কগুলোতে রাজস্ব করছে রিকশা। এদিকে যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য সড়কের মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। মুভমেন্ট পাস থাকলেই চলাফেরা করতে দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর সদরঘাট, গুলিস্থান, পল্টন, কাকরাইর, রামপুরা, বাড্ডা, প্রগতি সরণী, নতুনবাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।সরেজমিনে দেখা যায়, লকডাউনের দ্বীতিয় দিন বৃহস্পতিবার  রাজধানীর সড়কে গাড়ির চাপ না থাকায় বেশির ভাগ সড়ক ছিলো ফাঁকা। তবে সড়কগুলোতে রিকশার রাজত্ব দেখা গেছে। প্রতিটা সড়কের মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। তবে লকডাউনের মধ্যেও ব্যাংকসহ জরুরি যেসব অফিস খোলা রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা রাস্তায় নেমে অফিসে পৌঁছাতে গিয়ে পড়েছেন বিপাকে। কর্মীদের অফিসে নিয়ে যেতে পরিবহনের ব্যবস্থা করতে সরকারিভাবে নির্দেশনা দেওয়া হলেও বাস্তবে দেখা গেছে অফিসে পৌঁছানোর উপায় কর্মীদেরই খুঁজে বের করতে হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে পথচারীরা কোনো পরিবহন পাচ্ছেন না। রিকশা চললেও তা পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া রিকশাওয়ালারা ভাড়াও হাঁকছেন অনেক বেশি। তারপরও বাধ্য হয়ে রিকশা করেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
এদিকে যাত্রী ছাড়া রিকশা দেখলেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে রিকশা উল্টিয়ে দিচ্ছে, আবার রেকারে দিচ্ছে। পাশাপাশি সাধারণ যাত্রীদের কাছে মুভমেন্ট পাশ আছে কি দেখতে চাইছে। দেখাতে পারলে ছেড়ে দিচ্ছে নইলে রির্টান করছে বাসা বা জরিমানা করতে দেখা গেছে। প্রধান সড়কে কোনো রিকশা যাত্রী নিয়ে এলে, যাত্রী নামিয়ে রিকশা ঘুরিয়ে দিচ্ছে। রিকশার পাশাপাশি সড়কগুলোতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজি, ভ্যান দেখা গেছে। এসব গাড়িও থামিয়ে পাস দেখতে চাচ্ছে। পাস দেখাতে পারলেই যাতায়াত করতে দিচ্ছে এসব যানবাহন। এছাড়া যদি কেউ কোনো কারণ ছাড়া সড়কে মোটরসাইকেল, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ বের করলে কাগজপত্র দিতে না পারলে মামলা দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।রিকশ চালক আনোয়ার জানান, ভোর থেকেই রাস্তায় রিকশা চালাচ্ছি। সকালের দিকে পুলিশ কিছু রিকশায় রেকার দিয়েছে, আবার কিছু রিকশা উল্টিয়ে রেখেছে। আমার রিকশাও উল্টিয়ে রেখেছিলো। দুই তিন ঘণ্টা পরে ছেড়ে দিয়েছে। আমরা গরিব মানুষ ভাই একদিন রিকশা না চালালে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। রোজা রাখছি তাই ১টা পর্যন্ত রিকশা চালাবো। পড়ে বাসায় চলে যাবো। আবার কালকে ভোরে বের হবো। লকডাউনে কারো কিছু হয় না যতো সমস্যা শুরু আমাদের মতো গরিব মানুষের।  একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন পলাশ কর্মকার। তিনি জানান, আমাদের অফিস খোলা তাই বাধ্য হয়েই রাস্তায় নেমেছি। মতিঝিলে অফিস কিভাবে যাবো, অফিস কোনো গাড়ি দেয় নি, রাস্তায় কোনো সিএনজি নেই, রিকশাও ভাড়া চাচ্ছে অনেক। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। তাই বাধ্য হয়ে সঠিক সময়ে অফিস যাওয়ার জন্য ডাবল ভাড়া দিয়ে রিকশা নিয়েছি। এর মধ্যে রাস্তায় দুইবার চেকপোস্টে চেক করেছে।এদিকে, রাজধানীর সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। যারা বিনা কারণে বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন, মুভমেন্ট পাস না নিয়ে বাইরে বের হবেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানবেন না তাদেরকে জরিমানা করা হচ্ছে। জরিমানার পাশাপাশি জনগণকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না আসার জন্য এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্বুদ্ধও করছে র‍্যাব।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন