আন্তজাতিক ডেস্ক ; করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফ্রান্সে এক মাসের জন্য কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এ ঘোষণা দেন। দেশের কিছু অংশে বিচ্ছিন্নভাবে যেসব কঠোর বিধিনিষেধ চালু ছিল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোটা দেশের জন্য সেগুলো প্রয়োগের সিদ্ধান্তের কথা জানান ম্যাক্রোঁ। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেন, মহামারির প্রত্যেকটি পর্যায়ে হয়তো ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রতিবারই ভুল শুধরে নেওয়া হয়েছে। তার মতে, এখনই পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে না। দেশের বিপর্যস্ত অর্থনীতির স্বার্থে ম্যাক্রোঁ এতোদিন পর্যন্ত তৃতীয় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধান্বিত ছিলেন। নতুন বিধিনিষেধের আওতায় আগামী সপ্তাহান্ত থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান ছাড়া বাকি সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হবে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে কারফিউ চালু হবে। মানুষ নিজের বাসা থেকে ১০ কিলোমিটারের বেশি দূরে যেতে পারবেন না। অর্থাৎ দেশের মধ্যে মানুষের যাতায়াত কার্যত বন্ধ রাখা হচ্ছে। সারা দেশে তিন সপ্তাহের জন্য স্কুল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। ফ্রান্সে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার প্রায় ৩৭৫ ছুঁয়েছে। দিনে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে দেশের অনেক হাসপাতাল আর রোগী নিতে পারছে না। বিশেষ করে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটগুলো প্রায় ক্ষমতার সীমারেখায় পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ অবশ্য হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানোর ঘোষণা করেছেন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এক লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলোর মতো ফ্রান্সেও করোনার টিকাদান কর্মসূচি ধীর গতিতে এগোচ্ছে। যথেষ্ট সংখ্যায় টিকার সরবরাহে ঘাটতির পাশাপাশি আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকেও এই সংকটের জন্য দায়ী করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে মাত্র ১২ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়েছেন। ম্যাক্রোঁ টিকাদান কর্মসূচিতে গতি আনার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ৬০-এর বেশি বয়সের মানুষ এবং এর এক মাস পর ৫০-এর বেশি বয়সের মানুষ টিকা পাবেন। কড়া লকডাউন এবং দ্রুত টিকাদানের ফলে মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ধাপে ধাপে কড়াকড়ি শিথিল করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। সূত্র: ডিডাব্লিউ।