আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পরিবেশের সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং মধ্যপ্রাচ্যে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ (উচ্চ তাপমাত্রা, অনাবৃষ্টি, বালুঝড় ও মরুভূমি) মোকাবিলায় সবুজায়নের দিকে নজর দিচ্ছে সৌদি আরব। অঞ্চলটিতে পাঁচ হাজার কোটি গাছ লাগানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে তারা। এরমধ্যে এক হাজার কোটি গাছ লাগানো হবে সৌদি আরবে। বাকি চার হাজার কোটি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। সম্প্রতি ‘সৌদি গ্রিন ইনিশিয়েটিভ’ এবং ‘মিডল ইস্ট গ্রিন ইনিশিয়েটিভ’ নামে দু’টি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার ঘোষণা আসে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে। সৌদির অর্থনৈতিক-সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়নে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ১০ বছর মেয়াদি যে পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে, তার আওতায় এসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই উদ্যোগের ঘোষণা দেন যুবরাজ (ক্রাউন প্রিন্স) মোহাম্মদ বিন সালমান। পরিবেশগত আঞ্চলিক কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়ার উচ্চাভিলাষ থেকেই এমন ঘোষণা দিলো মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ক্ষমতাধর দেশটি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, কার্বন নিঃসরণ, দূষণ ও ভূমির অবক্ষয় সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সৌদি আরবেই লাগানো হবে এক হাজার কোটি গাছ। আর মধ্যপ্রাচ্যে লাগানো হবে চার হাজার কোটি গাছ। যা হতে যাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম বন পুনরুদ্ধার কর্মসূচি। সামগ্রিকভাবে এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মধ্যপ্রাচ্য সবুজায়ন প্রকল্প’। এ উদ্যোগের মাধ্যমে গাছের ঘনত্ব বাড়ানোর পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণ, দূষণ ও ভূমির অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াই, সামুদ্রিক পরিবেশে বিদ্যমান উদ্ভিদ, প্রাণী, অনুজীব রক্ষা করতে চান উদ্যোক্তরা। এজন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- এক হাজার কোটি গাছ লাগানো, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে অবদান রাখা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প চালু করা যা ২০৩০ সালে বিদ্যুৎ চাহিদার ৫০ শতাংশ পূরণ করবে। আর নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল ও বিশ্বের উন্নয়নে নেওয়া হয়েছে মিডল ইস্ট গ্রিন ইনিশিয়েটিভ। উদ্যোগের অন্যতম লক্ষ্য অঞ্চলে হাইড্রোকার্বন প্রযুক্তির দক্ষতা বাড়ানো ও চার হাজার কোটি গাছ লাগানো, যাতে বৈশ্বিক পর্যায়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমানো যায়। সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোতে প্রায় সর্বত্রই মরুভূমির প্রাধান্য। এসব দেশে পানির জোগানও একেবারেই কম। ফলে পানির চাহিদা মেটাতে এ অঞ্চলের অন্য দেশের মতো সৌদি আরবও সমুদ্রের পানি লবণমুক্ত করে পানযোগ্য করে তোলে। এজন্য দেশটি বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল ও গ্যাসের ব্যবহার করে। যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু সৌদি অর্থনীতিতে তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে চান মোহাম্মদ বিন সালমান। তাই গাছ লাগানোর উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।