ভাষাসৈনিক ইউসুফ হোসেন কালুর জানাজা সম্পন্ন

ভাষাসৈনিক ইউসুফ হোসেন কালুর জানাজা সম্পন্ন
বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশালে ভাষাসৈনিক ইউসুফ হোসেন কালুর (৯১) নামাজের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।  মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) সকাল ১০টায় নগরীর বগুড়া রোডের শ্রী চৈতন্য মোহন বিদ্যালয় মাঠে তার প্রথম নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।এতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন, প্যানেল মেয়র গাজী নাঈমুল হোসেন লিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. নাজমুল হুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মানিক (বীর প্রতীক) ও এমজি কবির ভুলুসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বহু মানুষ উপস্থিত ছিলেন।এর আগে চৈতন্য স্কুল মাঠে মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ হোসেন কালুকে পুলিশের একটি চৌকশ দল গার্ড অব অনার এবং রাষ্ট্রীয় সালাম দেওয়া হয়।  এ সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রশান্ত কুমার দাস, আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।  জানাজা শেষে ইউসুফ হোসেন কালুর মরদেহ বিশেষ ব্যবস্থায় তার গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠীর রাজাপুরের গালুয়া ইউনিয়নের কানুদাসকাঠী গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়।  সেখানে বাদ জোহর দ্বিতীয় নামাজেন জানাজা শেষে তার মরদেহ পারিবারিক গোরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. নাজমুল হুদা।এর আগে গত সোমবার (২৯ মার্চ) বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ভাষাসৈনিক ইউসুফ হোসেন কালু।পারিবারিক সূত্র জানায়, ইউসুফ হোসেন কালু ১৯৩১ সালের ১৭ জানুয়ারি ঝালকাঠীর রাজাপুরের কানুদাসকাঠী মিয়াবাড়িতে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা ওবায়দুল করিম রাজা মিয়া ও মা ফাতেমা খাতুন। ৩ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি।   ১৯৪৮ সালে বরিশাল বিএম স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন কালু। প্রগ্রেসিভ ছাত্রফ্রন্টের নেতা এমায়দুলের নেতৃত্বে মিছিলে যোগ দিয়ে প্রথম দিনই পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হন তিনি। মেট্রিকুলেশন পাস করে ১৯৫১ সালে বিএম কলেজে এইচএসসিতে (কমার্সে) ভর্তি হওয়ার পর ভাষা সংগ্রামে আরও সম্পৃক্ততা বেড়ে যায় তার।১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে, দেশের হয়ে মুক্তিযোদ্ধা খাতায় নাম লেখান। ১৯৭১ সালের ১৪ মে কোলকাতা লালবাজার চলে যান। সেখানে বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির সহযোগিতায় হাসনাবাদ, হিংগলগড়, টাকি হেড কোয়াটার থেকে প্রশিক্ষণ নেন। পরবর্তীতে ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে কালীগঞ্জ, সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন।শিক্ষা জীবনের প্রথমে ছাত্র ইউনিয়ন করেছেন কালু। ৫২ সালে যোগ দেন ছাত্রলীগে। পরে জড়িয়ে পড়েন আওয়ামী রাজনীতিতে। তিনি স্বৈরাচার বিরোধী ও প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ইউসুফ কালু কখনো রাজনীতিক, কখনো সাংবাদিক, কখনো সুধী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করা, বহুগুণে গুণান্বিত একজন মানুষ ছিলেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

সীতাকুণ্ড উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান রাজু আটক

শ্রমিক নেতা থেকে গুন্ডা বাহিনীর প্রধান হয়েছে শাজাহান খান: আব্দুল মোনায়েম মুন্না