নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করছে সরকার। তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং সুরক্ষায় আইনগত কাঠামো সূদৃঢ় করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দলের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপকমিটির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এ সভায় যুক্ত হন মন্ত্রী। তিনি বলেন, মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরির নিশ্চয়তা, চাকরির নিরাপত্তা এবং শ্রমিক কল্যাণ ও ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারের স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে শেখ হাসিনা সরকার। এ ছাড়া পুরুষ ও নারী শ্রমিকদের বেতন বৈষম্য দূর করতে নেওয়া হয়েছে কার্যকরী উদ্যোগ। শ্রমিক-মালিক সৌহার্ত্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি দেশে ৪৩টি শিল্প সেক্টরের মধ্যে ৪০টি সেক্টরে শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি শতভাগ বৃদ্ধি করে ৮ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির দেশ। কৃষিকে শিল্পে রুপান্তরের পাশাপাশি সরকার কৃষি কাজে নিয়োজিতদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। পোশাক শিল্পে পরিকল্পিত অন্তর্ঘাত এবং ফ্যাক্টরিতে উপর্যুপরি দুর্ঘটনা রোধ করতেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে শ্রম আইন নীতিমালা, শিশু শ্রম নিরসন, গৃহকর্মী সুরক্ষা ও পেশাগত নিরাপত্তা বিধানে আইনগত কাঠামো সূদৃঢ় করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনার অভিঘাত যেভাবে সরকার সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে, সেই ধারাবাহিকতায় করোনার টিকা সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও টিকা প্রদান কাজও স্বচ্ছতা, সফলতার সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকার সম্পন্ন করবে, ইনশাআল্লাহ। এ নিয়ে বিএনপি আগাম অপপ্রচার করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপির কাজই হচ্ছে বসে বসে মিথ্যাচার করা। মিথ্যাচার আর অন্ধ সমালোচনা ছাড়া তাদের অন্য কোনও সক্ষমতা নেই। করোনাকালে অসহায় মানুষের সুরক্ষা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক নেতৃত্বে যে উদ্যোগ চালানো হয়েছিল, তা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অথচ বিএনপি বরাবরের মতো মিথ্যা বলছে, সরকার নাকি করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলেছিলÑ ‘লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে, বিনা চিকিৎসায় রাস্তায় মরে পড়ে থাকবে। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং আল্লাহর রহমতে এখনও তা হয়নি বলেই বিএনপি নেতাদের আক্ষেপ। এজন্য তারা মনযন্ত্রণায় ভুগছে।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগ কর্মীরা যখন মানুষের কল্যাণে দিবারাত্র সেবা দিয়েছে, তখন বিএনপি উটপাখির মতো বালুতে মাথা লুকিয়ে রেখেছিল। আর এখন নির্লজ্জভাবে বলছে, ‘সরকার ব্যর্থ’। এখন বিএনপি করোনা টিকা নিয়ে আগাম অপপ্রচার শুরু করছে। দেশ ও মানুষের কল্যাণে যে কোনও কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই তাদের রাজনীতি মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার ও দেশের সফলতা এবং অর্জন বিএনপির গায়ে জ¦ালা ধরায়। তাদের আমলে প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিল। বর্তমান সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে এবং অপরাধীদের শাস্তি দিতে সামান্যতমও দ্বিধাবোধ করেনা বলে জানান ওবায়দুল কাদের।পৌরসভা নির্বাচনের পরবর্তী ধাপগুলোতে নৌকার বিপক্ষে দলের যে কোনো পর্যায়ের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বিদ্রোহী ও তাদের মদদদাতাদেরও কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। দলের যে কোনো পর্যায়ের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপকমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের একথা বলেন। তিনি তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এ আলোচনা সভায় যুক্ত হন। তিনি জানান, আগামী ৩০ জানুয়ারি সকাল ১১টায় গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে পঞ্চম ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিক ও সদস্য সচিব এবং আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান সিরাজ প্রমুখ।