১০৫ উচ্চফলনশীল জাত ও ২৫০ কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে ব্রি

১০৫ উচ্চফলনশীল জাত ও ২৫০ কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে ব্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এ পর্যন্ত ১০৫টি উচ্চফলনশীল জাত ও ২৫০টি লাগসই কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে বর্তমান সরকারের আমলে ৫৪টি জাত ও দুই’শ এর বেশি প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে। ব্রি ২০১৯-২০ বছরের গবেষণা পর্যালোচনাবিষয়ক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার গাজীপুরে ব্রি মিলনায়তনে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহ্সান রাসেল ও কৃষিসচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। এ সময় উৎপাদন দ্বিগুণ করতে আরও উন্নতজাতের ধান উদ্ভাবনের জন্য বিজ্ঞানী ও গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একসময় খাদ্য ঘাটতি ও ক্ষুধার দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। স্বাধীনতার পর জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি, যা এখন বেড়ে হয়েছে ১৬ কোটির উপরে। এর সাথে প্রাকৃতিক দুর্যোগতো আছেই। এরপরও বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই সাফল্যের পিছনে ব্রি’র উদ্ভাবিত জাত ও বিজ্ঞানীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। কিন্তু ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তায় মূল চ্যালেঞ্জ আবাদযোগ্য জমি ক্রমেই কমছে। বিপরীতে আমাদের জনসংখ্যা প্রত্যেকে বছর ২২ থেকে ২৩ লাখ বাড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করতে হলে আরও উন্নত জাত ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন করতে হবে। ব্রি উদ্ভাবিত শতাধিক জাতের ধান প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, উদ্ভাবিত জাতগুলোর মধ্য থেকে সেরাগুলো নিয়ে সকল সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যাতে কৃষকের কাছে এগুলো জনপ্রিয় হয়, সহজে তাদের কাছে পৌঁছানো যায়। তিনি আরও বলেন, একটি পুষ্টিউপাদান সমৃদ্ধ জাত না করে, বহু পুষ্টিউপাদান সমৃদ্ধ জাতের ধান উদ্ভাবন করতে হবে। এ ছাড়া মোটা চালের চাহিদা দিন দিন কমছে, সেজন্য চিকন চাল এবং কৃষক ও ভোক্তার চাহিদা বিবেচনা করে জাত উদ্ভাবনে এগিয়ে আসতে হবে। কর্মশালায় স্বাগত বক্তৃতা করেন ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর। বিগত এক বছরের গবেষণার অগ্রগতি তুলে ধরেন ব্রি’র পরিচালক (গবেষণা) ড. কৃষ্ণপদ হালদার। এ ছাড়া গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমলারঞ্জন দাশ, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. সায়েদুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম এ সাত্তার মন্ডল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ প্রমূখ। ব্রির সাফল্য ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরে ইনস্টিউটের মহাপরিচালক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন অভিঘাত সহনশীল জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনেও গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে ব্রি। এরইমধ্যে উদ্ভাবন করা হয়েছে লবণাক্ততাসহিষ্ণু ১২টি, খরাসহিষ্ণু ৩টি, জলমগ্নতাসহনশীল ৪টি ও ঠান্ডাসহনশীল ৪টি জাত। জনগণের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুষ্টিসমৃদ্ধ নিরাপদ জাত উদ্ভাবনে বিশ্বের সর্বাধুনিক বায়োফর্টিফিকেশন ও জিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করছে ব্রি বিজ্ঞানীরা। ড. কবীর জানান, ইতোমধ্যে জিঙ্কসমৃদ্ধ ৫টি ও প্রিমিয়াম গুণসম্পন্ন ১১টি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এছাড়া মুজিব শতবর্ষের উপহার হিসেবে হাইজিংক সমৃদ্ধ ব্রি-ধান ১০০ কারিগরি কমিটির অনুমোদন শেষে জাতীয় বীজ বোর্ডে অনুমোদনের জন্য জমা দেয়া হয়েছে বলেও জানান মহাপরিচালক।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

১৬৯ কর্মচারিকে চাকরিচ্যুত করলো রাসিক

মেহেন্দিগঞ্জ পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কর্মসূচি-৩ পরকল্পের চেক বিতরণ