রাজশাহী: রাজশাহীতে পৌষের শুরুতেই জেঁকে বসেছে শীত। শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) এক লাফে ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ছিল ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও ঠাণ্ডা বাতাসের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ঠাণ্ডায় গুটিশুটি হয়ে পড়েছেন পথের পাশে থাকা ছিন্নমূল মানুষগুলো। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষরা শীতে কাতর হয়ে পড়েছেন এখনই। আর শীত নিবারণের জন্য কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে তারা যাচ্ছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।তবে শুরুতেই শীত মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ প্রস্তুত হচ্ছে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর। সরকারি এ দফতরটি জানিয়েছে, শীতার্তদের মধ্যে এবার প্রথমধাপে প্রায় ৬০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হবে। এদিকে সন্ধ্যার পর ছিন্নমূল মানুষগুলোকে পথের পাশে খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে৷ এরইমধ্যে বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুল হক জানান, হঠাৎই ঠাণ্ডা বেড়েছে। তাই হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। আক্রান্তদের বেশিরভাগই ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, হৃদরোগ, অ্যাজমা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন।রাজশাহীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বলেন, কয়েক দিন থেকেই তাপমাত্রা নামছে। তবে রাজশাহীতে আজই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ১৭ ডিসেম্বর ছিল ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ১৬ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৬ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে আবহাওয়ার এ পরিসংখ্যানই বলছে রাজশাহীর তাপমাত্রা প্রতিদিনই কমছে।তিনি বলেন, সাধারণত তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি ও ৬ এর নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। সেই হিসেবে এখনও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়নি। তবে আগামী সপ্তাহে রাজশাহীতে গোটা উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। এদিকে আবহাওয়ার দীর্ঘ মেয়াদী পূর্বভাসে বলা হয়েছে, ডিসেম্বরে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। তাই এ মাসে রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকবে। এ মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দু’টি মৃদু (০৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ও মাঝারি (০৬-০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।