নিজস্ব প্রতিবেদক ; মানিলন্ডারিংয়ের দুই মামলায় এখন পর্যন্ত বিদেশে পাচার হওয়া দুই ব্যক্তির প্রায় ৪১ কোটি ৪১ লাখ টাকা ফেরত আনা হয়েছে। এ ছাড়া দুই ব্যক্তির ইংল্যান্ডে থাকা ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯১ পাউন্ড এবং এক ব্যক্তির হংকংয়ে থাকা ১৬ মিলিয়ন হংকং ডলার আদালতের আদেশের মাধ্যমে ফ্রিজ করা হয়েছে। অর্থ পাচার নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিবেদনে বলা হয়, দুদক ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধে ৪৭টি মামলায় আদালতে চার্জশিট দিয়েছে। অপরদিকে ৮৮টি মামলা তদন্ত করছে দুদক। এর মধ্যে বিভিন্ন মামলায় চার ব্যক্তির বিদেশে অর্থ/সম্পদ/ফ্রিজ/অবরুদ্ধ করা ও ফেরত আনা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০০৯ সালের কাফরুল থানার এক মামলায় পাচারকৃত প্রায় ২১ কোটি টাকা পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হয়েছে। এ ছাড়া একই সালে ক্যান্টনমেন্ট থানায় এক মামলায় গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা ফেরত এনে রাষ্ট্রের অনুকুলে জমা করা হয়েছে। ২০১৪ সালে রমনা থানার মামলায় ব্রিটেনে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আট লাখ আট হাজার ৫৩৮ পাউন্ড ফ্রিজ করা হয়েছে। ২০১৩ সালে গুলশান থানার এক মামলায় মোরশেদ খানের ১৬ মিলিয়ন হংকং ডলার ফ্রিজ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১১ সালের ক্যান্টনমেন্ট থানার এক মামলায় গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের চার লাখ ১৮ হাজার ৮৫৩ পাউন্ড ফ্রিজ করা হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ২২ নভেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এক আদেশে বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব ধরনের তথ্য চেয়েছেন। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব, দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। আদালতে দুদক আইনজীবী বলেন, আমরা ২০২০ সাল পর্যন্ত ডাটা দিয়েছি। তখন আদালত বলেন, এগুলোতো আগে করছেন। …পুরাতন কাহিনি বলে তো লাভ নেই। তখন খুরশীদ আলম খান বলেন, আমরা লেটেস্ট যতগুলো করেছি সবগুলোর ডাটা দিয়েছি। আপনাদের সামনে দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেন, ২২ তারিখের পর (২২ নভেম্বর) কী করছেন? তখন খুরশীদ আলম খান বলেন, ২২ তারিখের পর সমস্ত ডাটা যোগ করে প্রতিবেদন দিয়েছি। আদালত বলেন, কী পদক্ষেপ নিয়েছেন? জবাবে খুরশীদ আলম বলেন, টিল টুডে আমরা কী করেছি, সেটা দিয়েছি। এক পর্যায়ে আদালত বলেন, এরাতো দেশের মধ্যেই আছে। বাইরের তো কেউ নেই। এরপর আদালত টাকা পাচারকারীদের বিষয়ে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তথ্য জানাতে বলেছেন।