নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার কমলাপুর ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো বা আইসিডি বন্দর ক্রমাগত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। আইসিডি সংরক্ষিত এলাকা হলেও সেখানে অবাধে চলাফেরা করছে বহিরাগত লোকজন। যে কেউ চাইলেই সেখানে প্রবেশ করছে। সেখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নেই। বরং দুষ্কৃতিকারীদের অবাধ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে পণ্যের সুরক্ষা ও রাজস্ব আদায়। কমলাপুর আইসিডি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লষ্ট সূত্র মতে, কমলাপুর আইসিডিতে কাস্টমস বিভাগের পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরা বসানো হলেও দুষ্কৃতকারীরা তার কেটে ফেলছে। দীর্ঘদিন ধরে চলছে পণ্যের ওজন মাপার মেশিনের অপব্যবহার। বেড়েছে কারচুপি। তাছাড়া সেখানে পণ্যের প্রকৃত ওজনের চেয়ে ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি বেশি হয়। পাশাপাশি শুল্ক গুদামের গেটগুলোও খুবই ভঙ্গুর ও নাজুক।
সূত্র জানায়, কমলাপুর আইসিডি সংরক্ষিত বন্ডেড ও নিরাপদ এলাকা হলেও সেখানে অবাধে মানুষজন চলাফেরা করে। এ ধরনের অবাধ চলাফেরা পণ্যের সুরক্ষা, রাজস্ব আদায় কার্যক্রমের জন্য যথাযথ নয়। আইসিডিতে সব সময় অযাচিত লোকজনের ভিড় জমে থাকে। সিসি ক্যামেরার পরিধি বাড়াতে গেলে দুষ্কৃতকারীরা তার কেটে ফেলছে। আর শুল্ক গুদামের গেটগুলো খুবই ভঙ্গুর ও নাজুক অবস্থায় থাকায় তা খোলার অনুপযোগী। কমলাপুর আইসিডিতে বাণিজ্যিক পণ্য আমদানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় এবং শতভাগ কায়িক পরীক্ষার মাত্রা অধিক। সেজন্য একটি পণ্য পরীক্ষণ শেড করার জন্য ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ রেলওয়েকে বলা হলেও এখনো তা করা হয়নি।
সূত্র আরো জানায়, কমলপুর আইসিডিতে পণ্যের ওজন মাপার ওয়ে ব্রিজ মেশিনের স্বচ্ছতা নিয়েও উদ্বিগ্ন কাস্টমস। কারণ ওই মেশিন ঠিকমতো কাজ করছে না। তাতে পণ্যের সঠিক ওজন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পণ্যের ওজন কারচুপির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এমনকি ওই মেশিনে পণ্যের প্রকৃত ওজনের তুলনায় ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি ওজন বেশি হয়। অথচ যথাযথ রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে পণ্য চালানের ওজন নিশ্চিত করা জরুরি। যদিও ওজন মাপার ওয়ে ব্রিজ মেশিন দুটি স্থাপনের পর দীর্ঘদিন অপব্যবহার কিংবা কম ব্যবহার হওয়ার কারণে বেশ কিছু দিন অচল ছিল। কাস্টমস হাউসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে ১০ বার পত্র দিলেও বন্দরে অটোমেশন স্লিপ বা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার ওজন মেশিন স্থাপন করার উদ্যোগ ও কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে কমলাপুর আইসিডি কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোবারা খানম জানান, কাস্টমস হাউস ঘিরে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সিসিটিভি লাগানোর পর তা থাকে না। রাত-দিন প্রচুর জনসমাগম হচ্ছে। রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকছে না। তৈরি করা হয়েছে ভুতুড়ে পরিবেশ। ওজনে কারচুপি নিত্যদিনের ঘটনা। কনটেইনার থেকে পণ্য চুরি হচ্ছে। কাস্টমস হাউস দুষ্কৃতকারী চক্রের কাছে পুরো জিম্মি।